কাউন্সিলের ভেন্যু প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে, উৎসবমুখর কেন্দ্রীয় কার্যালয়

ভেনু পরিদর্শনে নোমানআর মাত্র একদিন পরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্খিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। ১৯ মার্চ শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন ও প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে এ কাউন্সিল। এ কারণে নেতাকর্মীদের ভিড় উপচে পড়ছে দলটির নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়। ভোর ৬টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নানামাত্রিক ব্যস্ততায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে কার্যালয় দুটিতে।

শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে লোকের জায়গা হবে না বলে বিএনপির যে শঙ্কা ছিল তা দূর হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাংশ ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে তারা।

এদিকে কাউন্সিলের ভেন্যু ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের ভেতর ও বাইরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে যুক্ত হয়েছে প্রশাসনের নজরদারিও। ঢাকা মহানগর পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা নিয়মিত বিরতিতে পরিদর্শন করছেন কাউন্সিল চত্বর।

বিএনপির কাউন্সিলের পোস্টার

ভেন্যুর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে, শুক্রবার সম্পন্ন
৬ষ্ঠ কাউন্সিল ভেন্যু ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন ও প্রাঙ্গণ সুসজ্জিত করার প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে রঙিন শামিয়ানা টানানো হয়েছে। মিলনায়তন ভবনের পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। পাশের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাউন্সিলরদের বসার স্থান করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের তত্ত্বাবধানে কয়েকশ শ্রমিক, দলীয় নেতাকর্মী কাজ করছেন ভেন্যু প্রস্তুতিতে। ভেন্যুর সামনে মৎস্যভবন থেকে শাহবাগের সড়কদ্বীপের ল্যাম্পপোস্টে ফেস্টুন লাগানো হয়েছে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে। কাকরাইল এলাকার সড়কগুলোয় সাদেক হোসেন খোকার নামেও ব্যনার, ফেস্টুন টানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ভেন্যু পরিদর্শনে আসেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যেই বাকি কাজ শেষ হবে।

একই সময়ে কাউন্সিল ভেন্যু পরিদর্শনে আসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রমনা জোনের ডিসি আবদুল বাতেন। তিনি আবদুল্লাহ আল নোমানের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল তাকে নিয়ে ভেন্যু পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতিপ্রাপ্ত অংশটিও দেখান।

এ সময় রমনা জোনের এসি শিবলী নোমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ খেয়াল রাখব। এছাড়া সম্মেলনের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিএনপি দলীয়ভাবেই ব্যবস্থা করবে। তাদের নিজস্ব অনুষ্ঠান তারা নিজেরাই করবে। আমরা বাইরের দিকটি দেখব।

এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে কাউন্সিলের উপ-কমিটির প্রধানদের নিয়ে কাউন্সিলের ভেন্যুস্থল পরিদর্শন এবং বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই সময় তিনি কাউন্সিল সফলে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আ স ম হান্নান শাহ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রহমানসহ উপকমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পল্টনে নেতাকর্মীদের ভিড়

উৎসবমুখরতা কেন্দ্রীয় ও চেয়ারপারসন কার্যালয়ে
বহুল আকাঙ্খিত কেন্দ্রীয় কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল। উৎসব পরিবেশ ও নানা কাজের উৎসবমুখরতা দেখা গেছে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। ইতোমধ্যে কাউন্সিলে অংশগ্রহণের জন্য কাউন্সিলকার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানের সকল প্রকারের কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে কার্যালয় থেকে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দেখা গেছে অন্তত শত শত নেতাকর্মীদের ভিড়। কার্যালয়ের ভেতরে নেই তিল ধারণের ঠাঁই। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর প্রতিটি অফিসে অবস্থান করছেন নেতাকর্মীরা। বিরামহীন বৈঠকে ব্যস্ত আছেন উপ-কমিটিগুলোর নেতারা। কার্যালয়ে দেখা গেছে ঢাকার আশেপাশের শহরের নেতাকর্মীদের। আবার কাউকে পদের ও কার্ড সংগ্রহ করতে লবিং করতেও দেখা গেছে।

জানতে চাইলে বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত এই কাউন্সিল। সকল উপ কমিটি তাদের কাজ সম্পন্ন করেছে। মাত্র ৫ ভাগ শেষ হয়ে যাবে শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যেই। কার্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে নেতাকর্মীদের উপস্থিতির কারণে। তারা কার্ড সংগ্রহ করছেন কাউন্সিলের।

চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিএনপির দেশের অন্যতম প্রধান দল। এই দলের কাউন্সিল যেমন বড় হবে, প্রস্তুতিও তেমন যজ্ঞ। নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত। আমাদের দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ম্যাডামের পরামর্শ ও নির্দেশনায় কাউন্সিলের সব প্রস্তুতি শেষ করছেন। আর মাত্র কিছু কাজ শেষ হলেই পুরোপুরি প্রস্তুত হবে ভেন্যু। এ নিয়ে গুলশান কার্যালয়ও নেতাকর্মীরা আছেন।

ছবি: সালমান তারেক শাকিল

/এসটিএস/এজে/