দেশের শেয়ারবাজার বর্তমানে অর্থনীতি থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির সঙ্গে পুঁজিবাজারের কোনও সংযোগ নেই। কারণ কেউই এই খাতের দায়িত্ব নিতে চায়নি, রাজনৈতিক অঙ্গীকারও কেউ করেনি।
শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর নিকুঞ্জে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার: দর্শন ও অনুশীলন’ শীর্ষক আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, শেয়ারবাজার নিয়ে যে কয়টি ভালো সংস্কার হয়েছে, তা বিএনপির আমলেই হয়েছে। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে এ খাতে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজারকে ক্যাসিনোর মতো পরিচালনা করা হয়েছে। দিন শেষে যেমন ক্যাসিনো মালিকের লাভ ঠিকই থাকে, তেমনই কিছু ব্যক্তির মুনাফা নিশ্চিত হয়েছে, অথচ প্রকৃত বিনিয়োগকারীরা হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত।
তিনি মনে করেন, বাজারের গুণগত পরিবর্তন ছাড়া বিনিয়োগ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শর্ত হচ্ছে বিনিয়োগ। বিনিয়োগের অন্যতম উৎস হবে পুঁজিবাজার। এ বাজারকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।
বিএনপির শাসনামলে আর্থিক খাত স্থিতিশীল ছিল দাবি করে আমির খসরু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মতো সংস্থাকে আমরা রাজনৈতিকীকরণ করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। তিনি অভিযোগ করেন, লুটপাট করতে করতে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল যে, ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করতে হয়েছে। অথচ বাজারের স্বাভাবিক নিয়মেই শেয়ারের দাম নির্ধারিত হওয়া উচিত।
বিনিয়োগ আকর্ষণে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক বিদেশি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী, তবে তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আলোচক হিসেবে অংশ নেন বিএসইসির কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, আইসিএমএবির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিল সদস্য মো. মোবারক হোসাইন এবং এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনুভা জাবীন।
সভায় বক্তারা শেয়ারবাজারের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি, নিয়ন্ত্রক সংস্থার স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর জোর দেন।