একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে বলে মনে করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এছাড়াও বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং ও বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলেও মনে করে দলটি।
শনিবার (১৪ জুন) জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, দেশে ফিরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল। বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে সংশয় নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার আহ্বান জানানো হয়। বলা ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠক হয়েছে—জামায়াতে ইসলামী এটাকে খুবই স্বাভাবিক মনে করে। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক এবং যৌথ বৈঠক করেছেন। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বিগত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তার এই ঘোষণার পর লন্ডনে সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি।
জামায়াতে ইসলামী মনে করে, সরকার প্রধান হিসেবে কোনও একটি দলের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। এতে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু কোনও একটি দলের সঙ্গে আলাপ করে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না।
জামায়াত আশা করে—অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবেন এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গত ১৬ এপ্রিল একটি বিদেশি মিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ২০২৬ সালের রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে বলে দলের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছিলেন।