‘বর্তমান সংবিধান সংসদের কাছে মন্ত্রীদের জবাবদিহি অ্যালাও করে না’

‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন জিএম কাদের সংসদকে সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু করা দেশের বর্তমান সংবিধান অ্যালাও করে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি (জাপা)-এর চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, ‘এই সংবিধান সংসদের কাছে মন্ত্রীদের জবাবদিহি অ্যালাও করে না। সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করতে পারেন না।’ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত আলোচনায় জি এম কাদের বলেন, ‘বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রকৃত গণতন্ত্রের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। বর্তমানে সংবিধানের কারণে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চা করতে পারছি না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সংসদীয় পদ্ধতির মূল স্পিরিট গ্রহণ করতে পারিনি। ৭০ ধারা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি বা বিবেচনার ওপরে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। দলের সঙ্গেই তাদের থাকতে হয়, দলের বাইরে তারা যেতে পারেন না।’

জি এম কাদের বলেন, ‘বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সরকারপ্রধান সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু থাকেন। এ কারণে, আমাদের দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারা অর্জিত হচ্ছে না। আর এ কারণেই আগে-পিছে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, তাদের সবাইকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে। কিন্তু সবাই মিলে দোষ দিয়েছেন শুধু একজনকে, তিনি হচ্ছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই অপবাদ দিয়েই এরশাদ ও জাতীয় পার্টির ওপর চরম অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি সংবিধানের ৭০ ধারা তুলে দেওয়া হয় এবং এমপিরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারেন, তাহলে সরকারের স্থায়িত্ব কম হবে। এতে প্রতি মাসেও সরকার পরিবর্তন হতে পারে, কোনও বিল পাস করতেও সমস্যা হবে সরকারের। এমন আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে আমরা পূর্ণ গণতন্ত্রচর্চার জন্য উপযুক্ত হতে পেরেছি কিনা, তাও বিবেচনা করতে হবে।’

জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সাল চিশতীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।