রওশনকে কেন্দ্র করে জাপা থেকে বাদ পড়লেন রাঙ্গা

‘দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে’ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ-পদবি থেকে মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপিকে অব্যাহতি দিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতিপত্রে কোনও কারণ উল্লেখ করা না হলেও মসিউর রহমান বলছেন, বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন জি এম কাদের।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়াটি নিয়মসিদ্ধ হয়নি বলে আমি তাকে বলেছি। আমি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ। আমি তাকে বলেছিলাম, বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে সব এমপির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো। কিন্তু তিনি সবাইকে না জানিয়ে চিঠি দিয়ে সংসদের বৈঠক করলেন। সাদা কাগজে সই করালেন। আমার কাছে সেই কাগজ আছে।’

জাপায় এই অবস্থা সৃষ্টির শুরুটা হয় ৩১ আগস্ট। সেদিন রওশন এরশাদ সিঙ্গাপুর থেকে এক চিঠিতে আগামী ২৬ নভেম্বর দলের কাউন্সিল ডাকেন। পরদিন জাতীয় পার্টি জানায়, দলের চিফ প্যাট্রন পদে থেকে রওশন এরশাদের কাউন্সিল ডাকার কোনও ক্ষমতা নেই। এরপর দলের প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতার পদের জন্য সদস্যরা সমর্থন জানান।

গত ১ সেপ্টেম্বর রওশন এরশাদকে সরিয়ে জি এম কাদেরকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় পার্টি। বিরোধীদলীয় নেতার পদে জি এম কাদেরকে মনোনয়ন দিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠিও দেয় জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল। সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকেন মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং ওই বৈঠকের কার্যবিবরণীতে তিনি নিজেও সই করেন। কয়েক দিন পর একটি গণমাধ্যমে রওশন এরশাদকে সরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। এরপরই জি এম কাদেরসহ শীর্ষ নেতারা তার ওপর ক্ষুব্ধ হন। এরই প্রতিক্রিয়ায় অব্যাহতি পেলেন মসিউর রহমান।

এ প্রসঙ্গে রাঙ্গা জানান, তিনি তার অবস্থান তুলে ধরার জন্য বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানেই বিস্তারিত জানাবেন।

মসিউর রহমান রাঙ্গা মনে করেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে জাপার যোগসূত্র সৃষ্টির চেষ্টা করছেন জি এম কাদের। রাঙ্গার অভিযোগ, বিএনপির সঙ্গে ঘেঁষতে গিয়েই জি এম কাদের তার সঙ্গে এই অবস্থান সৃষ্টি করেছেন।

রাঙ্গা বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ। তিনি কিছুই করতে পারবেন না। এরশাদ সাহেবকে বিএনপি ১২ দিন  কারাগারের ফ্লোরে শুয়ে থাকতে বাধ্য করেছে। আমার ছেলেকে কিডন্যাপ করেছে, আমি তো কোনোদিন বিএনপির দিকে যাবো না।’