‘কে বড়, মমতা না মোদি?’

একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীনরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মতি না জানানোর কারণে তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় বিস্মিত বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তার প্রশ্ন— ‘কে বড়, দিল্লি না কলকাতা? মমতা না মোদি?’
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে কুড়িল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বিকল্পধারার বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি অভিযাত্রার সময় আমরা তিস্তার পানির জন্য চাতক পাখির মতো তাকিয়েছিলাম। মমতা রাজি হননি, তাই মোদী দিলেন না। মমতা কি তাহলে মোদির চেয়েও বড়?’
তিস্তা নিয়ে মমতার বক্তব্য টিভিতে দেখেছেন জানিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘টিভিতে দেখলাম মমতা বলেছেন, “আমাদের তিস্তার জল নেই, কোথা থেকে দেবো?”। তিস্তার বদলে “আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে” এমন চারটি খালসম নদী দেখিয়ে দিলেন তিনি। প্রশ্ন হলো, তিস্তাতে ‘জল’ যদি নাই থাকে তাহলে তা বাংলাদেশকে দিতে সমস্যা কোথায়?”
পানি চাইলেও বিদ্যুৎ পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর সন্তুষ্টি দেখে হতাশা ব্যক্ত করেছেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য আরও চমকপ্রদ— ‘কুছ তো মিলা, পানি মাঙ্গা তো ইলেকট্রিসিটি মিলা।’ তাহলে বাংলাদেশের মানুষ কি আশায় আশায় কামান চেয়ে গুলতি পেয়েই খুশি থাকবে?”
বিকল্পধারা বাংলাদেশের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের পর তার সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে বেশকিছু অস্পষ্টতা ও গরমিল দেখা যাচ্ছে। যেমন, তারই সরকারের আমলে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা গ্রিক নারী মূর্তির বিপক্ষে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা।

এ প্রসঙ্গে একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘যে হেফাজতের অনুষ্ঠান ব্যর্থ করার জন্য এই সরকার রেল, বাস, লঞ্চ বন্ধ করে পায়ে হাঁটা লাখ লাখ তৃষ্ণার্তকে পানি খাওয়ানোর সমালোচনা করেছে, আজ তাদের দাবিগুলোকে মেনে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। দাওরাকে এমএ’র সমতুল্য করার সঙ্গে গ্রিক মূর্তি অপসারণের কথাও বললেন তিনি।’

নির্বাচন আসন্ন মন্তব্য করে বি চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তন লক্ষণীয়, তবে এ নিয়ে সমালোচনার কিছু নেই। যেহেতু এটা এক ধরনের রাজনৈতিক দাবার চাল, নির্বাচনের প্রাক্কালে এগুলো হয়েই থাকে। এগুলো নির্বাচনমুখী সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা কিনা রাজনৈতিক মহল তা ভাবতে শুরু করেছে। আমরা শান্তি-শৃঙ্খলা, সুশাসন এবং গণতন্ত্রের অবমুক্তি দেখতে চাই।’

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট শাহ আহাম্মেদ বাদল, মঞ্জুর রাশেদ, মাহফুজুর রহমান, জানে আলম হাওলাদার, ড. নোমান, আইনুল হক, ওবায়েদুর রহমান মৃধা, বিএম নিজাম, মাওলানা মো. কবীর প্রমুখ। আলোচনা শেষে ছিল দলীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

/সিএ/জেএইচ/