মৌলবাদী শক্তিকে হাতে রাখতেই কওমি সনদকে স্বীকৃতি: গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা

715কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দিয়ে সরকার মৌলবাদী শক্তিকে তুষ্ট করে তাদের হাতে রাখার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ। তার মন্তব্য, ‘হেফাজতের সঙ্গে চুক্তি করতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুতর সংকটের মুখে ফেলে দিচ্ছে সরকার। অন্যদিকে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করেছে ভারতের সঙ্গে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর এবং কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর পল্টনে নির্মল সেন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফিরোজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘হেফাজতের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করার মধ্য দিয়ে সরকার আসলে একদিকে তার ক্ষমতার গতি পাকাপোক্ত করে অন্যদিকে সব শিশুর শিক্ষার দায় এড়িয়ে তাদের ছেড়ে দিতে চায় সামাজিক দান নির্ভর মাদ্রাসা শিক্ষার হাতে।’
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার অভিযোগ, ‘সরকার একদিকে মৌলবাদীদের ক্রমাগত নানান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রাজনীতির মাঠে হাজির রেখে জনগণের প্রধান প্রশ্নগুলোকে আড়াল করছে। অন্যদিকে অসাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদী বিরোধী লড়াইয়ের নামে আরেকদলকে নামিয়ে দিচ্ছে প্রতিরোধের জন্য। এর মধ্য দিয়ে জনগণের রাজনীতিকে আড়াল করার দুরভিসন্ধিই আমরা দেখতে পাচ্ছি। এরই উদাহরণ হলো প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থ ভারত সফরের বিষয়টি গণমাধ্যম থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় সব প্রসঙ্গ সামনে চলে আসা।’

ফিরোজ আহমেদের দাবি- প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরে বাংলাদেশের অর্জন কী, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কোথাও। তার অভিযোগ, ‘দেশের জনগণের জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ, সেই তিস্তার পানিচুক্তি বিষয়ে কোনও আলাপ হয়নি এই সফরে। সীমান্তে বিএসএফের একের পর এক হত্যাকাণ্ড পরিচালিত করার মতো বিষয়েও কোনও আলোচনা হয়নি। দেশের মানুষের জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ, সেই আলাপগুলোই পরিত্যক্ত হয়েছে। কিন্তু ভারতের স্বার্থে যা যা প্রয়োজন তা সবই দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

সংগঠনটির পক্ষ থেকে আগামী ২৫ এপ্রিল বিকাল ৫টায় ঢাকাসহ সারাদেশে ভারতের কাছ থেকে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, সীমান্তে হত্যা বন্ধ এবং স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ডাক দেওয়া হয়েছে।

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা বহ্নিশিখা জামালী প্রমুখ।

/সিএ/জেএইচ/