ঢিলেঢালাভাবে বাম জোটের হরতাল পালিত

01গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলা হরতাল ঢিলেঢালাভাবে শেষ হয়েছে। রবিবার (৭ জুলাই) এই জোটের ৮ ঘণ্টা হরতালে রাজধানীতে তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বৃষ্টির মধ্যে চলা হরতালে সমাপনী বক্তব্যে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক মোশারফ হোসেন নান্নু ১৪ জুলাই জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে হরতালের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মোশারফ হোসেন নান্নু বলেন, ‘গ্যাসের বর্ধিতমূল্য প্রত্যাহারে আগামী ১৪ জুলাই জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করা হবে। এরপরও সরকার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আগামী ১৯ জুলাই ঢাকায় প্রতিনিধি সভা করা হবে।’
বাম জোটের ডাকা এই হরতালে সাধারণ মানুষের সমর্থন থাকলেও পালনে তেমন কোনও আগ্রহ ছিল না। রাজধানীর একটি মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আবু সাঈদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ৮ হাজার ৫শ’ টাকা বেতন পাই। এর বাইরে টিউশনিসহ অন্যান্য সব কিছু মিলিয়ে ১৫ হাজার টাকা আয় করি। তিন ছেলে মেয়ে আর বাবা-মাকে নিয়ে এই টাকায় কষ্টে চলতে হয়। এরপর গ্যাসের দাম বাড়ালে আরও কষ্ট বেড়ে যাবে।
01রবিবার সকাল থেকে সরেজমিনে দেখা যায়- সকাল ৭ টার দিকে হরতাল সফল করতে রাজধানীর পল্টনে মিছিল করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। মিছিল চলাকালে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির মধ্যে মিছিল বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে গিয়ে আবার নয়াপল্টন গোল চত্বরে এসে অবস্থান নেয়। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, শাহবাগ, চানখাঁরপুল, বকশিবাজার, লালবাগ, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, কাকরাইল, হাইকোর্ট মোড় এলাকা হরতালকারীদের মিছিল করতে দেখা গেছে।
এদিকে হরতালকারীরা নয়াপল্টনে দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ দু’জনকে আটক করলেও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া হরতাল চলাকালে পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় থাকতেও দেখা গেছে। পাশাপাশি জলকামান, প্রিজন ভ্যান প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। এর বাইরে সকাল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে হরতালকারীরা। এসময় আশপাশের এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।

দুপুর ১২ টা থেকে রাজধানীর সব এলাকা থেকে হরতালকারীরা বাম জোটের নেতাকর্মীরা পল্টন গোল চত্বরে জড়ো হয়ে সমাপনী সমাবেশ করে।
সমাবেশ বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘জনগণের দাবি আদায়ে রাজপথে আছি। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাবো। সরকারকে বলবো জনগণের দাবির কাছে নতি স্বীকার করুন। না হলে পালানোর পথ পাবে না।’666
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘কত গাড়ি রাস্তায় নামলো তা দিয়ে হরতালের সফলতা বিচার করা যাবে না। কারণ এই হরতালে ১৬ কোটি মানুষের সমর্থন রয়েছে।’
বিএনপিসহ হরতাল সমর্থনকারী দলগুলোর উদ্দেশে সাকি বলেন, ‘শুধু হরতাল সমর্থন করলে হবে না। রাজপথে নেমে প্রমাণ করতে হবে কারা জনগণের পক্ষে আছে। লাঠি, পুলিশ আমরা ভয় পাই না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে। এই সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
হরতাল সমাপনী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ অনেকে।