প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রবের খোলা চিঠি

আ স ম আবদুর রব

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। চিঠিতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণ ও খাদ্য ঝুঁকি নিয়ে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। শনিবার (২ মে) সন্ধ্যায় রবের রাজনৈতিক সচিব শহীদুল্লাহ ফরায়জী চিঠিটি গণমাধ্যমে পাঠান।

চিঠিতে আ স ম রব বলেন, করোনায় সৃষ্ট বৈশ্বিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশও গভীর সংকটে। একদিকে স্বাস্থ্যসেবা অন্যদিকে আর্থসামাজিক সংকট দুটোই নির্মম বাস্তবতা। এ ভয়াবহ সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য অনিবার্য। জাতীয় ঐক্যই সমগ্র জাতির মাঝে উচ্চতর আত্মমর্যাদা বোধের জন্ম দেবে এবং ন্যায়বোধ ও মানবিক শক্তির বিকাশ ঘটাবে। ঐক্যের ফলে সম্মিলিত প্রয়াস ও মনোবল আরও শক্তিশালী হবে এবং দুর্যোগ উত্তরণ সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, একপেশে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরাক্রমশালী ক্ষমতার ধারাবাহিকতা রাষ্ট্রীয় অরাজকতাকে প্রণোদনা জোগাবে, আগামীর সমাজ কাঠামোকে বিপন্ন করবে এবং অমানবিক অনৈতিক এক রাজনীতির উত্থান ঘটাবে।
করোনায় আমাদের আর্থসামাজিক ব্যবস্থা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছে বলে উল্লেখ করে রব বলেন, কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দারিদ্রসীমার নীচে অবস্থান করছে। ফলে বিপুল-সংখ্যক মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা, চিকিৎসা, নগদ সহায়তা ও পুনর্বাসনে বিরাট অর্থের প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় উৎসের বাইরে আমাদের জাতীয় অর্থনীতির বিরাট অংশ দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের করায়ত্তে।
রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ও ভয়ংকর লুণ্ঠনে সারা দেশে বিপুল সংখ্যক দুর্বৃত্ত চক্র গড়ে উঠেছে বলে মনে করে ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, দুর্নীতির কালোছায়া সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য হুমকি স্বরূপ । বিদ্যমান মানবিক বিপর্যয়েও ত্রাণ চুরি আত্মসাৎ এবং লুণ্ঠনের যে ভয়াবহ দলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির চিত্র উন্মোচিত হয়েছে তা জাতির জন্য লজ্জার।
রব আরও বলেন, ইতোপূর্বে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে অবৈধ সম্পদের ভয়াবহ চিত্র, টাকার গোডাউন, স্বর্ণালংকারের স্তূপ আবিষ্কৃত হয়েছে।আপনার দুর্নীতি বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা দেয়ার পরও দুর্নীতি বিরোধী অভিযান কেন বন্ধ তা বোধগম্য নয়। এই দুর্নীতিবাজরা বঙ্গবন্ধুর শাসনামলকে বিতর্কিত এবং বঙ্গবন্ধুকে কি পরিমাণ মানসিক যাতনা দিয়েছে তাও আপনি অবগত।
দুর্নীতি বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার দৃঢ় অঙ্গীকার বাস্তবায়নের এখনই উপযুক্ত সময় বলে উল্লেখ করে রব বলেন, কারণ লকডাউনের ফলে দুর্নীতিবাজরা এখন দেশে অবস্থান করছে। আকাশপথ জলপথ স্থলপথ সহ সব পরিবহন এবং সীমান্ত পথে যাতায়ত বন্ধ থাকায় বিদেশ পাড়ি দেয়ার তাদের সুযোগ নেই। এমনকি লক ডাউনে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পর্যন্ত ধরা পড়েছে। বিদ্যমান বাস্তবতায় টাকার গোডাউন স্থানান্তর এবং অর্থ পাচার করাও দুরূহ।
জেএসডির সভাপতি বলেন, করোনায় সেনাবাহিনী সারা দেশে নিয়োজিত তাই র‍্যাব কতৃর্ক সূচিত দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রমে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করে নতুন উদ্যোমে শুরু করা জরুরি। দুর্নীতি বিরোধী অভিযান পুনরায় গতিশীল করার মাধ্যমে ঘুণে ধরা রাষ্ট্রব্যবস্থা বদল করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রব।