ওয়াসার এমডিকে অপসারণের দাবি

করোনা সংকটে মানুষের আর্থিক দুরবস্থার সময়ে ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, ‘দুর্নীতিবাজ’ এমডি তাকসিম এ খানের অপসারণ ও ঢাকা মহানগরের দখলকৃত খাল-পুকুর-ডোবা উদ্ধার করে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ।

সোমবার (২১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এই দাবি জানায় দলটি। সমাবেশ শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি পেশ করা হয় বলে জানায় বাসদ।

বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন— বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদ কেন্দ্রীয় বর্ধিত পাঠচক্র সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, দলের ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল ও খালেকুজ্জামান লিপন। সমাবেশ শেষে একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে মন্ত্রীর দফতরে গিয়ে স্মারকলিপি পেশ করে।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ঢাকা ওয়াসা ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নগরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহের একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এ প্রতিষ্ঠানটি মুনাফালোভী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকার গত ১৩ বছরে ১৪ বার পানির দাম বৃদ্ধি করলো। আর এই জনদুর্ভোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজ ওয়াসা এমডি’র কারসাজি মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। সরকার সকল নিয়ম-রীতি ভেঙে তাকসিম এ খানের মতো দুর্নীতিবাজকে ওয়াসার এমডি হিসেবে  ২০১০ সালের ১৪ অক্টোবর নিয়োগ দেওয়ার পর দফায় দফায় মেয়াদ বৃদ্ধি করছে। একই সঙ্গে তার বেতনও বৃদ্ধি করে চলেছে। শুরুতে ৬০ হাজার টাকা মূল বেতন ও অন্যান্য ভাতাসহ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ধরা হলেও বর্তমানে তা ৪২১ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।

নেতারা বলেন, করোনার এই সংকটকালে মানুষের আয় যখন কমে গেছে, কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছে, তখন পানির দাম বৃদ্ধি মরার ওপর খাড়ার ঘা এর সামিল। নেতারা পানির দাম বৃদ্ধি নয়, ওয়াসার দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধের দাবি জানান। তারা বলেন, ঢাকা শহরের চারদিকে চারটি নদী রয়েছে, তারপরও পানি নিষ্কাশন হয় না। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় নগর জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়ে। শহরের খাল, পুকুর, জলাধার দখল হয়েছে, পাম্পগুলো নষ্ট হয়ে রয়েছে। পাম্প মেরামত ও  খাল-পুকুর উদ্ধারে তেমন কোনও উদ্যোগ নেই।

সমাবেশ থেকে দুইটি দাবি সংবলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এগুলোর মধ্যে আছে— ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করুন, দাম বৃদ্ধি নয়, দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ করুন। দুর্নীতিবাজ ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানকে অপসারণ করুন এবং  ঢাকা শহরের খাল-পুকুর-ডোবা উদ্ধার করে, জলাবদ্ধতা দূর করুন, নগর জীবন রক্ষা করুন।