দেশে উদ্ভূত রাজনৈতিক সংকটের দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে বলে মনে করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। রবিবার (২৫ মে) দুপুর ২টায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির এক বৈঠক থেকে এ কথা বলা হয়।
নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার ও গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘসূত্রতার কৌশলে ফেলে এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে মানবিক করিডর, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে লিজ দেওয়ার মতো কিছু সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। এমতাবস্থায় সরকারের উচিত চব্বিশের গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে জনগণের কাছে দৃশ্যমান করা এবং একটি সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কার করে ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় না নিয়ে শুধুমাত্র একটা বিশেষ দল ও গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করায় এই দূরত্ব তৈরি হয়ে সংকটের জন্ম দিয়েছে।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের যে সংবাদ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে— এর প্রকৃত রহস্য কী তা দেশবাসীর কাছে এখনও অজানা। প্রধান উপদেষ্টার বিষয় সরকারের কোনও মুখপাত্রের দিক থেকে না এসে একটা নতুন দলের আহ্বায়ক মারফত বিবিসির কাছে এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় দেশবাসীর মধ্যে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে যে, এটা কি ইউনূস সরকারের ইমেজ সংকট পুনরুদ্ধারের কোনও পরিকল্পিত প্রকল্প কিনা।
সভার প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ‘যারা সরকারের কাজের সমালোচনা করছে, তারা পতিত ফ্যাসিস্টের দোসর এবং বিদেশি শক্তির ইন্ধনে কাজ করছে’—প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের এমন বক্তব্য বাস্তবে সরকারের ব্যর্থতার দায় অন্যদের ওপর চাপানোর চেষ্টা। এমন বক্তব্য পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির সুরের সঙ্গে মিলে যায়। প্রস্তাবে সব গঠনমূলক সমালোচনা বিবেচনায় নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বামজোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, নজরুল ইসলাম এবং বাসদের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জনার্দন দত্ত নান্টু।