আ.লীগ সমঝোতায় না এলে ‘নতুন রিপাবলিক’ তৈরি করতে হবে: সাকি

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক সমঝোতায় আসার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘‘রক্তপাত এড়িয়ে, অরাজনৈতিক প্রক্রিয়া এড়িয়ে যদি আমরা কোনও সমাধানে পৌছাতে চাই, তার জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানো। না হলে সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বাধ্য করতে হবে। ‘নতুন রিপাবলিক (প্রজাতন্ত্র)’ তৈরির পথে অগ্রসর হতে হবে।’’

রবিবার (১০ অক্টোবর) তিনটি  সংগঠনের (রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ এবং গণসংহতি আন্দোলন) উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘নাগরিকদের ভোটাধিকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোন পথে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি  বলেন, ‘আইন করে নির্বাচন কমিশন সংস্কার করা যাবে না। কেননা, এই সরকারের তৈরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আমরা দেখেছি। জনগণের স্বার্থের পক্ষের কোনও আইন তৈরির ক্ষমতা এই সরকারের নেই। এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন আইন চাই না।’

সাকি বলেন, ‘প্রথম বিষয় হলো—বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। ভোটাধিকারকে স্থায়ী অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই এখন একদফার লড়াই। এর জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য, সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগের জন্য স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে। তৃতীয়ত, সংসদে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবলু। তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে কোনও সরকার পর পর দুইবার ক্ষমতায় আসতে পারেনি। মানুষ ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দিয়ে মানুষের ভোটের অধিকারকেই কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ত্রয়োদশ সংশোধনী সম্পর্কিত মামলায় ১০ জন এমিকাস কিউরির মধ্যে ৮ জনই এর বিপক্ষে রায় দেন। ৭ জন বিচারকের মধ্যে ৩ জন ভিন্নমত পোষণ করেন। কিন্তু বিচারপতি খাইরুল হক তার সঙ্গীয় ৩ জনকে নিয়ে সিঙ্গেল মেজরিটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করেন।’

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘বর্তমান সংকট শুধু ভোটাধিকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। বরং, পুরো রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমেই স্থায়ী সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’ 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন—বীর মুক্তিযোদ্ধা নইম জাহাঙ্গীর, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান রুবেল ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাস নাইন বাবু।