‘দুর্নীতির ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় থাকার অধিকার কারও নেই’

যারা দুর্নীতির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। শুক্রবার (২৫ মার্চ) বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বামজোটের ডাকা হরতালের (২৮ মার্চ অর্ধদিবস) প্রচার সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বর্তমান সরকার দমন-পীড়ন চালিয়ে তাদের শাসন অব্যাহত রেখেছে এবং এই শাসনকে পুরোপুরি লুটপাটের কাজে নিয়োজিত করেছে। সমস্ত প্রকল্পে লাগামহীন ব্যয় বেড়েই চলেছে। এই ব্যয়ের জোগান দেওয়ার জন্য সরকার জনগণের পকেট কাটছে এবং লাগামহীনভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। লাগাম টেনে ধরার কোনও জায়গা নেই। তারা বলছে, সিন্ডিকেট দাম বাড়াচ্ছে। আবার বলছে, সিন্ডিকেট দমনের ক্ষমতা তাদের নেই। তাহলে কেন তারা ক্ষমতায় আছে? তারা বিরোধী দলকে দমন করতে পুরো পুলিশ-র‌্যাব বাহিনীকে লেলিয়ে দিতে পারে। কিন্তু সিন্ডিকেট দমন করতে পারে না।’

বর্তমান সরকার সিন্ডিকেটের ওপর দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা খুব স্পষ্ট, সরকার নিজেই সিন্ডিকেটের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, এই সরকার সিন্ডিকেটের সরকার। এই সরকারের বিরুদ্ধে আগামী ২৮ তারিখ জনগণের হরতাল পালিত হবে। সেই হরতালের মাধ্যমে বার্তা দিতে হবে, এই সরকারের কোনও জনসমর্থন নেই। যারা দুর্নীতির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, জণগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়, তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।’

দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারীদের জন্য স্থায়ীভাবে গণ-রেশনিংয়ের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। আমরা বলেছি, তাদের জন্য গণ-রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। আপনারা মানুষকে যেভাবে টিসিবির ট্রাকের পেছনে ছুটিয়েছেন, তাদের প্রায় ভিক্ষুকের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন। এই সরকারকে এ ধরনের আচরণের জন্য সময়োচিত জবাব দিতে হবে। নয়তো এরা গণ-রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করবে না। আন্দোলনের চাপে কার্ডের ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু দেশে স্থায়ীভাবে গণ-রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ মানুষের আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করতে হবে।’

‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যখন জনগণের নাভিশ্বাস, তখন সরকার আবার বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। চারিদিকের আন্দোলনের পরিস্থিতির কারণে হয়তো তারা একটু পিছিয়ে যাবে, পরে আবার সুযোগ বুঝে এগুলোর দাম বাড়িয়ে দেবে,’ বলেন জোনায়েদ সাকি।

আগামী ২৮ তারিখে বামজোটের ডাকা হরতাল সমর্থন এবং এতে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন (ছাত্রলীগ) হামলা করতে পারে। আমাদের সেসব শক্তহাতে প্রতিহত করতে হবে। এরপর আর বাংলাদেশে ভোট ডাকাতি করতে দেওয়া হবে না।’

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমম্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখ্তার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়সহ অন্যান্য নেতারা। 

সমাবেশ শেষে শাহবাগ মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি হরতালের সমর্থনে প্রচারপত্র বিতরণ করতে করতে কাঁটাবন হয়ে নীলক্ষেত মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।