বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না: সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বর্তমানে বিরোধী দলগুলো সমাবেশ করলে বা আন্দোলনে নামলে বাস, লঞ্চের ধর্মঘট দেওয়া হয়। এমনকি সরকারি বাস বিআরটিসিও বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় নামলে গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে জনগণকে পথে পথে আটকানো হয়। বর্তমানের এ অবস্থা যদি চলতে থাকে, তবে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না। তিনি বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার যে সরকার কেঁড়ে নেয় এবং সেটাকে স্থায়ী করে, সেই দেশে রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকের বিচ্ছিন্নতা ঘটে যায়। যে দেশে নাগরিকের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নেওয়া হয়, সে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না।’

শুক্রবার (৪নভেম্বর) বিকালে রাজধানী শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘সংগ্রামের ২ দশক ও রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের ৭ বছর’ শীর্ষক  আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য তিনি এ সব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা এভাবে টিকে থাকতে পারে, তবে তারা দেউলিয়া বানিয়ে দেবে। সরকারি প্রত্যেক প্রকল্প থেকে লুটপাট করে তারা বিদেশে অর্থপাচার করছে। ১০ লাখ কোটি টাকার ওপরে বিদেশে অর্থপাচার করেছে তারা। ক্ষমতায় টিকতে না পারলে আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম তৈরি করছে। কথায় কথায় তারা জেলে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে।’

জনগণের ঐক্যের সামনে সরকারের এই হুমকি টিকবে না বলে উল্লেখ করে সাকি বলেন, ‘সরকার হুমকি দিচ্ছে মানে তারা ভয় পেয়েছে, তাদের পায়ের তলায় মাটি নাই। যারা জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়, তাদের কোনও নৈতিক শক্তি অবশিষ্ট থাকে না। এই সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিতভাবে লড়তে হবে।’ এসময় বিরোধী দলগুলোকেও যার যার অবস্থান থেকে একতাবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

সংগঠনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে দুর্ভিক্ষ আসবে, তাই সবাই যেন প্রস্তুতি নেয়। সরকারের এই কথার অর্থ দুটো হতে পারে। এক. সরকারের নিজের অবস্থা ভালো নেই। দুই. দেশে চলমান লুটপাট। একটি দেশে দুর্ভিক্ষ দুটো কারণে হয়। দেশটিতে গণতন্ত্রের অভাব ও মানুষের টাকা গুটিকয়েক মানুষের পকেটে যাওয়ার ফলে। বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী সরকার হলো লুটপাটের সরকার।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার সাধারণ মানুষের ঘামের টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকাচ্ছে, আর সেটা বিদেশে পাচার করছে। চলমান লুটপাট বন্ধ করে এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে হলে আগে এই সিন্ডিকেট সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবুর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমী ও মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ মল্লিক ও অঞ্জন দাস, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক রায় ও তরিকুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর মহানগরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বামন ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডসহ আরও অনেকে।