গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, রাষ্ট্রের এমন কোনও আইন থাকা চলবে না, সরকার যাতে গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরতে পারে।
রবিবার (৪ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর করার, প্রতিষ্ঠা করার কিংবা যারা গণতন্ত্রের পক্ষে তাদের অঙ্গীকার রাখতে চান, তার প্রাথমিক ব্যাপার হচ্ছে— তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করবে কিনা। আমাদের দলের পক্ষ থেকে সংগ্রাম আছে, অঙ্গীকার আছে যে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আমরা আমাদের সর্বোচ্চ লড়াইটা করবো।
তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি চাইলেন আর অনেকগুলো গণমাধ্যম খুলে ফেললেন, এই জায়গাটা বন্ধ হওয়া দরকার। গণমাধ্যমের মালিকানার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকার দরকার। যাতে সেখানে কোনও একচেটিয়া কায়েম না হয় এবং একচেটিয়া স্বার্থের সেবক হিসেবেও গণমাধ্যম না দাঁড়ায়। এটা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের অংশ। রাষ্ট্রের এমন কোনও আইন থাকা চলবে না, সরকার যাতে গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরতে পারে। যা যা আইন করেছে তার সবগুলো বাতিল করতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গত ৫৩/৫৪ বছরের মধ্যে বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, এর মত গণমাধ্যমের প্রতি উদার দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন কোনও সরকার আসেনি। আগামীতে আসবে কিনা জানি না। আমি মনে করি, যারাই ক্ষমতায় যাবেন তারাই বলবেন এই নীতিটাকে তারা কীভাবে প্রণয়ন করবেন। কীরকমভাবে বাস্তবায়ন করবেন।
তিনি বলেন, ওই পাড় থেকে শেখ হাসিনা প্রতিদিন বিবৃতি দেন। আবার আজকাল গ্রুপ বৈঠক করেন। মানে অনলাইনে গ্রুপে গ্রুপে ডাকেন এবং তাদের নির্দেশনা দেন। এরকম চলতে দেওয়া কী ভালো হচ্ছে? আমার কাছে মনে হয় না। আবার এরকম মুক্ত, অবাধ তথ্যের চর্চা বন্ধ করবেন সেটাও কি নীতির মধ্যে পড়ে? ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যেসব সাংবাদিকদের নামে মামলা করা হয়েছিল, সে মামলাগুলো আছে এখনও পর্যন্ত। কিন্তু ড. ইউনূসের মতো মানুষ এই মামলাগুলো তুললো না কেন? নাহিদরা যতদিন দায়িত্বে ছিল ওরা তুললো না কেন? কোনও কারণ নিশ্চয়ই আছে। যে কারণে তুলতে পারেনি অথবা তুলেনি।
সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সম্পাদক পরিষদের সহ-সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির, সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনে প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ প্রমুখ।