সিরাজুল আলম খান আমার রাজনীতির দার্শনিক শিক্ষক: আ স ম রব

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত সম্পদ-স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি অর্জনের বাইরে অকৃতদার সিরাজুল আলম খান অনন্য সাধারণ বাঙালি। ইতিহাস তাকে বাঙালির ‘দেদীপ্যমান বাতিঘর’ হিসেবে ইতিহাসের ঐতিহাসিকতায় ধারণ করবে। সিরাজুল আলম খান ছিলেন আমার রাজনৈতিক দার্শনিক শিক্ষক। তার মৃত্যুতে দেশ অন্যতম একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো। সিরাজুল আলম খান বাঙালির অন্তরাত্মায় সবসময় জাগ্রত থাকবেন।’

শুক্রবার (৯ জুন) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠাবো শোক বার্তায় আ স ম আব্দুর রব এসব কথা বলেন। এর আগে দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিরাজুল আলম খান।

সিরাজুল আলম খানকে ‘স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ, নেপথ্যের নায়ক ও সফল স্বপ্নদ্রষ্টা’ উল্লেখ করে শোকবার্তায় আ স ম রব বলেন, ‘বাঙালির জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, যুব ছাত্রদের মনে স্বাধীনতার অগ্নিশিখা ছড়িয়ে দেওয়ার মন্ত্র এবং সকল সংগ্রাম আন্দোলনকে গণআন্দোলনে রূপান্তর করে স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনার অন্যতম কৌশল প্রণয়নকারী তিনি। ১৯৬২ সালেই স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে নিউক্লিয়াস গঠন করেন। এই নিউক্লিয়াসই ছাত্র জনতার আন্দোলন, ৬ দফা ১১ দফা সহ প্রতিটি আন্দোলনকে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত সৃষ্টির কাজে রূপ দিতে গুরু দায়িত্ব পালন করে।’

শোক বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ‘একাত্তরের আগেই সম্ভাব্য সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধকে হিসাবে রেখে, বিএলএফ বা মুজিব বাহিনী গঠন করা হয়। জয়বাংলা বাহিনী গঠন, জাতীয় পতাকা তৈরি ও উত্তোলন, জাতীয় সংগীত নির্ধারণ, বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করে স্বাধীনতার ইশতেহার প্রণয়ন, অসহযোগ আন্দোলন, ৭ মার্চের ভাষণসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সমন্বয় সাধনে ঐতিহাসিক ও যুগান্তরকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করে অনন্য ইতিহাসের নায়ক তিনি।’

সিরাজুল আলম খান সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের পর ‘বিপ্লবী জাতীয় সরকার’ গঠন, স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনায় সংবিধান প্রণয়ন, জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর গঠন এবং সমবায় ভিত্তিক অর্থনীতিসহ ১৫ দফা করণীয় উত্থাপন করে রাষ্ট্র বিনির্মাণের রূপরেখা প্রদান করেছিলেন বলেও উল্লেখ করেন আ স ম রব। তিনি বলেন, ‘১৯৭২ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল গঠন, ৭৫ এ সিপাহী জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারী ছিলেন সিরাজুল খান। বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে অনেক অবিস্মরণীয় ঘটনার নেপথ্য নায়ক তিনি।’

বিবৃতিতে জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার বিপরীতে বাংলাদেশের জনগণকে শ্রমজীবী কর্মজীবী পেশাজীবী সামাজিক শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে ১৪ দফা সম্মিলিত সম্মিলিত রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক মডেলসহ রাজনৈতিক তত্ত্ব উদ্ভাবন করেন।’

আরও পড়ুন:

সিরাজুল আলম খান মারা গেছেন