রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি রাখা ও না রাখা নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ ও ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ নামে দুটি সংগঠনের মধ্যে হাতাহাতি ও হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’র সদস্যদের বিচার দাবি করে মশাল মিছিল করেছে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে রোকেয়া হল, ভিসি চত্বর, সূর্যসেন হলসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
এ সময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই অভুত্থানের বৈষম্যহীন চেতনার অংশ হিসেবে দেয়ালের একটি গাছে শিক্ষার্থীরা লিখেছিল—এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ , খ্রিষ্টান ও আদিবাসী থাকবে। সব মিলিয়েই এই বাংলাদেশ। পরবর্তী সময়ে পাঠপুস্তকে এটি অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ নামে এনসিটিবি ভবনে যায়। তারা এনসিটিবিকে বাধ্য করে পাঠ্যপুস্তক থেকে এটি বাদ দেওয়ার জন্য। এটি বাঙালি উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তা। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এনসিটিবি ভবনের সামনে যায়। আমরা দেখলাম স্ট্যাম্প দিয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির শিক্ষার্থীরা। সেখানে বেশ কয়েজন আহত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, জুলাই গণঅভুত্থানের চেতনায় সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ থাকবে। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, ‘আমার আত্মপরিচয় আমি ঠিক করবো। একজন বাঙালি যেমন চামকা হতে পারে না, তেমনই একজন চাকমা মারমা, ত্রিপুরা বাঙালি হতে পারে না। এই দেশের মানুষের একটাই পরিচয় হবে—সেটি হলো বাংলাদেশি। পাহাড়কে সেনাশাসনের মধ্যে রেখে বৈষম্যহীন সমাজ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে না। আজকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। তাদের বিচারের আওতায় আনা দরকার। তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চায়। জাতিকে বিভাজন করতে চায়। এ বিভাজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ কখনও মেনে নেবে না।’