বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বছরে জনপ্রতি ১৭ ঘণ্টা ব্যয়!

বিদ্যুৎ বিল দেওয়া আগে ছিল ঝামেলাপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষএকবছরে ১২টি বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে একজন গ্রাহকের গড়ে ১ হাজার ২৪ মিনিট বা ১৭ ঘণ্টা সময় লাগে! আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ পরিচালিত এক অনলাইন জরিপে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

তবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২০ মিনিটেই ১২টি বিল পরিশোধ করা যায়, যা একইসঙ্গে ৫০ গুণ সময় সাশ্রয়ী, সহজ ও ঝামেলাহীন।

‘বিদ্যুৎ বিল দিতে সারাবছর আপনার কত সময় লাগছে?’ শিরোনামে গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিকাশ পরিচালিত অনলাইন জরিপে অংশ নেন ৭৪ হাজার ৩৩৮ জন। তাদের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়– ব্যাংকে বা বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার অফিসে অথবা দোকানে গিয়ে বিল পরিশোধের প্রচলিত তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। এক্ষেত্রে বছরে জনপ্রতি গড়ে ১ হাজার ২৪ মিনিট বা ১৭ ঘণ্টা সময় লাগে। একইসঙ্গে রয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল প্রদান কেন্দ্রে পৌঁছানোর বাধ্যবাধকতা। কখনও কখনও লম্বা লাইনে অপেক্ষা করতে হয় তাদের। সংশ্লিষ্ট খরচ তো আছেই।

অন্যদিকে মোবাইল ফোনে এই আর্থিক সেবা পেতে প্রতিবার ১ থেকে দেড় মিনিট করে বছরে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট লাগে। গ্রাহকরা সুবিধামতো যেকোনও সময়ে, যেকোনও স্থান থেকে বিল পরিশোধের সুযোগ পান। তাছাড়া একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকেই একাধিক গ্রাহকের বিল পরিশোধ করা যায়।

সময় ও খরচ বাঁচিয়ে ঝামেলা এড়িয়ে সহজে বিল পরিশোধের সুবিধা থাকায় মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) বেছে নিচ্ছেন গ্রাহকরা। গত পাঁচ বছরে মোবাইল ফোনে ইউটিলিটি বিল পরিশোধের হার বেড়েছে প্রায় ৩৪৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৫ সালে এমএফএস-এর মাধ্যমে ১ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকার বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির মতো জরুরি সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে এসে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৩ কোটি টাকা।

ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রথাগত পদ্ধতিতে বিল পরিশোধ করে থাকেন এমন গ্রাহকরা জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খুচরা টাকা সংক্রান্ত ঝামেলায় পড়তে হয় তাদের।
এমএফএস বা মোবাইল ওয়ালেট দিয়ে বিল পরিশোধে সময় এবং খরচ বাঁচানোর পাশাপাশি নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে ব্যবহারকারীদের।

ডেসকো প্রিপেইড মিটার রিচার্জ কিংবা গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ বিল সবই বিকাশে পরিশোধ করা যায়। বিল পরিশোধে অন্যের ওপর নির্ভরতা বা বাড়তি সময় ও খরচের হাত থেকে বাঁচিয়েছে এই সেবা।

বিকাশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জুনে বিকাশ পে-বিল সেবা চালু হওয়ার পরেএর মাধ্যমে ২২ কোটিরও বেশি বিল পরিশোধ করা হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

বিকাশের চিফ কর্মাশিয়াল অফিসার মিজানুর রশীদ বলেন, ‘শিগগিরই বাংলাদেশের সব বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রের গ্রাহকরা বিকাশে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সুযোগ পাবেন। একইসঙ্গে থাকছে বিল চেক করা ও বিল দেওয়ার পর রশিদ সংরক্ষণের সুযোগ। সনাতনি পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের তিক্ত অভিজ্ঞতার বদলে বিকাশে বিল পরিশোধে দারুণ অভিজ্ঞতা হবে গ্রাহকের। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।’