২০০ বছরের ‘বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ’ প্রকাশ করছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র  

গত ২০০ বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষীদের সুনির্বাচিত রচনা একত্রিত করে ‘বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ’ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এই রচনা সংগ্রহ প্রকাশের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে ছিলেন এই প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সম্পাদকমণ্ডলি ও বিশিষ্টজনেরা। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘ ২৪ বছরের পরিশ্রমে প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত সম্পাদনা পরিষদের সম্পাদনায় ১৬টি বিষয়ে দুই শতাধিক খণ্ডে প্রকাশিত হচ্ছে ৭৪ হাজার পৃষ্ঠার এই রচনা সংগ্রহ। এই সংগ্রহে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ষোলটি বিষয়। সেগুলো হলো– ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, পরিবেশ, চলচ্চিত্র, সংগীত, রাজনীতি, ভাষা, সংস্কৃতি, নারী, সমাজ, অর্থনীতি ও শিক্ষা। বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের উজ্জ্বল স্মারক এই রচনা সংগ্রহের প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

অনুষ্ঠানে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘এই ২০০ বছর শুধু ২০০ বছর নয়, তা বাঙালির ২০০ বছরের চিন্তাশক্তির স্ফুরণ। গত ২০০ বছরের আগেও অনেক বড় বড় কাজ হয়েছে। কিন্তু এই ২০০ বছরের সঙ্গে তা তুলনীয় নয়।’

তিনি বলেন, ‘একদিন আমার মনে হলো, এই যে ২০০ বছর ধরে বাঙালি জাতির মধ্যে বৌদ্ধিক জাগরণ–  যারা এর  নায়ক, যারা এর নেতা, তারা এগুলো করেছেন; এগুলো নিয়ে লিখেছেন; তারা জাতির চিত্রকর্ষের জন্য চেষ্টা করেছেন। অনুশীলনের চেষ্টা করেছেন। এই যে এত বড় বড় কাজ, এত বড় বড় ঘটনা– এগুলোতো রক্ষিত হলো না। কেননা চিন্তা, মূল্যবোধ, মননশীলতা, জ্ঞানচর্চা, মুক্তিসংগ্রাম– সব মিলিয়ে বাঙালির জীবনে এ সময়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, উর্বর ও ঐশ্বর্যময়। এ সময়ে বহু বাঙালি মনীষী, ভাবুক বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা করেছেন, লিখেছেন। তাদের সেই রচনাগুলোকে একত্র করতে পারলে তা বাঙালি জাতির জন্য বিরাট সম্পদে পরিণত হবে। এরপর এই সংগ্রহের, এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে এই কাজটি করলে সবারই উপকার হবে, জাতির উপকার হবে। তাই আমরা এই প্রকল্প হাতে নিয়েছি।’

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে অনেক দুর্লভ বইয়ের সংগ্রহ আছে, যা সব জায়গায় পাওয়া যাবে না। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও পাঠাগারগুলো যদি এই সিরিজগুলো সংগ্রহ করে তাহলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষকরা উপকৃত হবেন।’

তিনি বলেন, ‘এই বইগুলো সর্বাধিক মানুষের কাছে যত কম দামে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে ২০২৪ সালের ৩০ মার্চের মধ্যে ২০৮ খণ্ডের সিরিজটি সংগ্রহ করতে হলে ৫০ শতাংশ ছাড়ে তা ৯০ হাজার টাকায় সংগ্রহ করা যাবে।’

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র জানায়, গ্রন্থমালারটির ২০৮ খণ্ড একত্রে অথবা বিষয়ভিত্তিক সেট সংগ্রহ করা যাবে। ১৬টি বিষয় নিয়ে এই সংকলনটির এখন প্রি-অর্ডারের জন্য বুকিং নেওয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়ে। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে প্রি অর্ডার করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক মূল্যের জন্য https://bcrs.bskbd.org ওয়েবসাইটে গিয়ে ক্রেতার পছন্দের বিষয়ের আইকনে ক্লিক করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক প্রি-অর্ডারে ছাড় ৪৫ শতাংশ। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চের পর গ্রন্থমালার মূল্যের ছাড় হবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নির্ধারিত নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ শতাংশ ছাড়ে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা। সম্ভাব্য সরবরাহের তারিখ হবে ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল। ইতোমধ্যে পাঁচটি বিষয়ের (সংস্কৃতি, দর্শন, নারী, বিজ্ঞান ও ইতিহাস) ৫৪টি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকাশিত বিষয়ভিত্তিক সংকলনগুলো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করে এখনই সংগ্রহ করা যাবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে বাকি খণ্ডগুলো প্রকাশিত হবে। ওয়েবসাইটে ক্লিক করে বিভিন্ন খণ্ডের রচনার তালিকা পাওয়া যাবে।