আন্তর্জাতিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ‘ইয়ং লিডার ফেলোশিপ প্রোগ্রামে’ অংশ নিয়ে প্রধান তিন রাজনৈতিক দলের ২৫ জন তরুণ নেতা গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করছেন। নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত চার মাসব্যাপী ফেলোশিপ প্রোগ্রামটি সফলভাবে সম্পন্ন করেন তারা। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে তাদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়।
দেশের ৯টি জেলা থেকে আসা গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন ফেলোরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সক্রিয় নেতা।
ইউএসএআইডির স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিল) প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম বেশ কয়েক বছর ধরে বাস্তবায়ন করছে। এটি ছিল ফেলোশিপ প্রোগ্রামের ২৩তম ক্লাস। এখন পর্যন্ত দেশের ৫৬১ জন তরুণ রাজনৈতিক নেতা এই কর্মসূচি থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন।
আয়োজকরা জানান, ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো তরুণ নেতাদের রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা, রাজনৈতিক দলে তাদের অগ্রযাত্রাকে সমৃদ্ধ করা, অন্যান্য রাজনৈতিক দলে তাদের সমকক্ষদের প্রতি সহমর্মিতা বৃদ্ধি এবং পেশাদার সম্পর্ক তৈরি করা যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গুণগত পরির্তন আনতে পারে। ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে বাংলাদেশের তরুণ রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বেশ সুপরিচিত কারণ এটি নেতৃত্ব এবং রাজনীতি বিষয়ে শেখার অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করে যা সাধারণত অন্য কোথাও সুলভ নয়।
চার মাসব্যাপী নিবিড় প্রশিক্ষণে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, নেতৃত্ব দক্ষতা, রাজনৈতিক চর্চা, দ্বন্দ্ব নিরসন, দল সুসংগঠিতকরণ ও গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিকরণ বিষয়ে বিশদ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন অংশগ্রহণকারীরা। এর পাশাপাশি তিন দলের সদস্যরা মিলে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে তারা কাজ করেছেন। যেমন, মেহেরপুর ও ময়মনসিংহের অনুন্নত এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন, সিলেটে একটি সড়কের বর্জ্য পরিষ্কার ও ৫০০টি ডাস্টবিন স্থাপন, চাঁদপুর পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গুমুক্ত করতে প্রচারাভিযান পরিচালনা, পটুয়াখালীতে পুকুর পরিষ্কারসহ আরও বেশ কিছু কার্যক্রম ফেলোশিপের আওতায় সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন ফেলোরা।
গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবেও এসেছিলেন প্রধান তিন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
এ সময় দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তারা দেশের নাগরিকদের সেবা করার জন্য ফেলোশিপ কর্মসূচিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্যদের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এসপিএল প্রকল্পের চিফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস বলেন, ফেলোশিপ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আসা নেতাদের মধ্যকার সহযোগিতা ও সম্মিলিত উদ্যোগ এবং তাদের নিজেদের জেলার সাধারণ মানুষের জন্য একসঙ্গে কাজ করা প্রমাণ করে যে ইতিবাচক, জনমুখী রাজনীতি সম্ভব।
আমন্ত্রিত অতিথি ও এসপিএল প্রকল্পের চিফ অব পার্টি ফেলোদের হাতে সনদ তুলে দেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র ডিরেক্টর লিপিকা বিশ্বাস, প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট রামিসা করিম ও সাবেক ফেলোরা।
ইউএসএআইডি
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডির মাধ্যমে বাংলাদেশকে ৮০০ কোটি ডলারেরও বেশি উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন অধিদফতরের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ৭ কোটি ডলারের বেশি দিয়েছে।
২০২০ সালে ইউএসএআইডি বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ২০ কোটিরও বেশি ডলার দিয়েছে ইউএসএআইডি বাংলাদেশে যেসব কর্মসূচিতে সহায়তা দেয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রসার, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুবিধাদির সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসেবার উন্নয়ন ও অভিযোজন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র কমিউনিকেশনস ম্যানেজার আরাফাত আলী সিদ্দিক স্বাক্ষরিত পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।