রোহিঙ্গা শিবিরে ‘হেপাটাইটিস সি’ চিকিৎসা সম্প্রসারণে নতুন উদ্যোগ

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ‘হেপাটাইটিস সি’ সংক্রমণ মোকাবিলায় এর চিকিৎসা কর্মসূচির ব্যাপক সম্প্রসারণ শুরু করেছে ‘মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ)‘। এই কার্যক্রমের আওতায় ২০২৬ সালের মধ্যে অন্তত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা ব্যক্তিকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এমএসএফ জানিয়েছে, এই ‘পরীক্ষা এবং চিকিৎসা’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে তিনটি বিশেষায়িত হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। নতুন এই সেবাগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করবে।

সংস্থাটি বলছে, ২০২০ সাল থেকে জামতলী ও পাহাড়ের উদ্দি হাসপাতালে ‘হেপাটাইটিস সি’-এর চিকিৎসা দিয়ে আসছে এমএসএফ। ইতোমধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এ সেবা পেয়েছেন। 

২০২৩ সালে প্রকাশিত এমএসএফ পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রোহিঙ্গা প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি পাঁচ জনে একজন হেপাটাইটিস সি সংক্রমণে আক্রান্ত, যা সংক্রমণের মোট সংখ্যা আনুমানিক ৮৬ হাজারে পৌঁছেছে।

এমএসএফ-এর ডেপুটি মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর ডা. ওয়াসিম ফাইরুজ বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ক্যাম্পে হেপাটাইটিস সি চিকিৎসার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ক্যাম্পের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত নয়। ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করাও কঠিন, কারণ আইনি সীমাবদ্ধতা ও চিকিৎসার খরচ উভয়ই বড় বাধা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পে জনসংখ্যার ঘনত্ব, অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা এবং আইনি সুরক্ষার অভাবের কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী হেপাটাইটিস সি-সহ নানা সংক্রামক রোগে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।’

নতুন প্রকল্পে কমিউনিটি-ভিত্তিক রোগ নির্ণয়ের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে, যাতে উপসর্গবিহীন রোগীরাও শনাক্ত হন। দ্রুত পরীক্ষা শেষে নিশ্চিতকরণ পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে বালুখালী, জামতলী ও পাহাড়ের উদ্দি হাসপাতালের নতুন বিশেষায়িত ল্যাবগুলোতে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিরোধমূলক তথ্য এবং চিকিৎসা অনুশাসন প্রদান করা হবে।

তিনি অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন একটি সমন্বিত কৌশলের মাধ্যমে হেপাটাইটিস সি নির্মূলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।