বাংলাদেশের নবম উইকেটের পতন

259013হায়দরাবাদে মধ্যাহ্ন ভোজের পর মনোযোগ হারিয়ে হারের ক্ষণ গুনছে সফরকারীরা। বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৯ উইকেটে ২৪৯ রান।  
যদিও দিনের তৃতীয় ওভারে সাকিবের বিদায়ের পর আশার আলো দেখাচ্ছিল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জুটি। কিন্তু দলীয় ১৬২ রানে মুশফিককে বিদায় করে জুটি ভেঙে দেন অশ্বিন।
সাকিবের বিদায়ের পরেই ধীর-স্থির ভাবে ইনিংস সামাল দেওয়া শুরু করেন অধিনায়ক মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দুই জনের জুটিতেই আসে ৫৬ রান। কিন্তু মুশফিক রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে জমা পড়েন জাদের হাতে। এরপর মাহমুদউল্লাহ জুটি গড়েন সাব্বিরকে নিয়েও। প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টায় ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে করেন ৫১ রান। কিন্তু এই জুটিকেও টিকতে দেয়নি স্বাগতিক বোলাররা। মধ্যাহ্ন ভোজনের বিরতির পর পর ফিরে যান সাব্বির রহমানও। ইশান্ত শর্মার বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন ২২ রানে। অবশ্য এরপর রিভিউ নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তাতেও বাঁচতে পারেননি সাব্বির।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ নামলেও নিজের ধীর স্থির খেলার কৌশলটা আর ধরে রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দীর্ঘ দিন পর টেস্ট হাফসেঞ্চুরি পাওয়া রিয়াদকে লং লেগে তালুবন্দী করান ইশান্ত শর্মা। শর্মার বল ঠিকভাবে পুল করতে না পারায় ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে তালুবন্দী হন তিনি।  
অবশ্য বিপর্যয়ের মাঝেও প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মাহমুদউল্লাহ। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফসেঞ্চুরি। এরমধ্য দিয়ে ২০১৫ সালের পর প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান মাহমুদউল্লাহ।  তার ব্যাটে ভর করেই প্রথম সেশনে ৩২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে সফরকারীরা সংগ্রহ করে ৯৯ রান।
রিয়াদ সর্বশেষ ২০১৫ সালের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৬৭ রান করেছিলেন। এরপরে টেস্টে আর সেভাবে হাসেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট। বেশ কয়েকবার কাছে গেলেও দেখা পাননি কাঙ্ক্ষিত হাফসেঞ্চুরির।
এর আগে শেষ দিনের তৃতীয় ওভারে ফিরে যান সাকিব। ফুটমার্কে পড়া জাদেজার ডেলিভারির টার্ন ও বাউন্সে সামলে খেলতে পারেননি। বল ব্যাটের একেবারে ওপরে লেগে জমা পড়ে শর্ট লেগে থাকা পূজারার হাতে। ৫০ বল খেলে সাকিব বিদায় নেন ২২ রানে।

হায়দরাবাদে এর আগে ৩ উইকেটে ১০৩ রানে চতুর্থ দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ।
পঞ্চম ও শেষ দিনে ৪৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে হলে বাংলাদেশকে ইতিহাসের পাতা ওলট পালট করতে হবে। কারণ রেকর্ড বুকে ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই।
বাংলাদেশ অবশ্য ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করে একটি ম্যাচ বাঁচিয়ে ছিল। ওইবার প্রায় দেড়দিন উইকেটে পড়ে থেকে ম্যাচটি ড্র করে বাংলদেশ। চতুর্থ দিন শেষে বিনা উইকেটে ৯৮ রান তোলে স্বাগতিকরা। এরপর পঞ্চম দিনের পুরোটা সময় উইকেটে আঁকড়ে থেকে ১৪২ ওভার ব্যাটিং করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান সংগ্রহ করলে ম্যাচটি ড্র হয়। সেই ম্যাচটিতে বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম ও নাফিস ইকবাল ৮৬ ওভার ব্যাটিং করে ১৩৩ রানের জুটি গড়েছিলেন। একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি বাঁচাতে হলে বর্তমানে দলের দুই থেকে তিনজন ব্যাটসম্যানকে ২০০৫ সাল ফিরিয়ে আনতে হবে।
ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ওভার ক্রিজে থেকে রেকর্ডবুকে টিকে আছে দক্ষিণ আফ্রিকার দিল্লি টেস্টটি। ওই ম্যাচে ১৪৩.১ ওভারের বিপরীতে টিকে থেকে প্রোটিয়ারা করেছিল মাত্র ১৪৩ রান। কিন্তু শেষ বিকালে হারতে হয়েছিল প্রোটিয়াদের।
চতুর্থ ইনিংসে একশোর উপরে ওভার খেলা ম্যাচ আছে আরও ৬টি। যার একটিতে জেতেনি কেউই। তিনিট ম্যাচে নিউজিল্যান্ড তিনবার ড্র করতে সমর্থ হয়েছে। বাকি একটি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ড্র করলেও ইংল্যান্ড দুই ম্যাচের মধ্যে একটি ড্র ও একটি ম্যাচে হেরেছে। সোমবার হায়দরাবাদ টেস্টের শেষ দিনে ভারতের বিপক্ষে হার এড়াতে হলে পুরো দিনটায় টিকে থাকতে হবে বাংলাদেশকে।
/এফআইআর/