আবাহনীর শিরোপা খরা কাটিয়ে খুশিতে আত্মহারা জাহানারা

ম্যাচ সেরা জাহানারা (ফাইল ছবি )মেয়েদের প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ পেয়েছে আবাহনী। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদকে তিন উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা জিতে দীর্ঘ দিনের খরা কাটালো তারা।

তাই প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে আনন্দে আত্মহারা আবাহনীর অধিনায়ক জাহানারা। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এভাবেই, ‘অসাধারণ একটা দিন কেটেছে। শিরোপা জয়ের আনন্দ সবাই নেচে-গেয়ে উদযাপন করেছে। দলের সমন্বিত প্রচেষ্টাতেই আমাদের এই ফল। সবার পারফরম্যান্স এতো ভালো ছিল যে, এক ম্যাচ হাতে রেখেই আমরা শিরোপা জিতে গেছি।’

লিগে ১০ ম্যাচের আটটিতেই জিতেছে আবাহনী। বাকি একটি হার ও একটি বৃষ্টির কারণে টাই হয়েছে। অবশ্য এমন পারফরম্যান্সের আগে শুরুতে হুঙ্কার দিয়েছিলেন আবাহনীর কোচ। অবশেষে কথা অনুযায়ী কাজটা ঠিকমতো করতে পেরেছেন বলে স্বস্তির আভাস তার কণ্ঠে, ‘আমরা এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোই দল গড়েছিলাম। দল-বদলের সময়ই ঘোষণা দিয়েছিলাম- মাঠের লড়াইয়ে আমরা আমাদের আধিপত্য দেখাবো। সেটা দেখাতে পেরে সবচেয়ে ভালো লাগছে।’

মেয়েদের প্রিমিয়ার লিগের এটা নবম আসর। এর আগের আট আসরের ছয়বারই চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। এছাড়া একবার করে শিরোপা ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেয়েছে আনসার ও ভিডিপি এবং রুপালী ব্যাংক। এবার গত আসরের চ্যাম্পিয়ন রূপালী ব্যাংককে হারিয়েই শিরোপা আনন্দে মাতোয়ারা গোটা ক্লাব। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের অনেক প্রাপ্তি থাকলেও মেয়েদের এই শিরোপা না পাওয়াটা অনেকদিনের আক্ষেপ হয়েই ছিল। অবশেষে কর্মকর্তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে আনন্দিত জাহানারা, ‘আবাহনী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এই ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই আমাদের ফলাফলে দারুণ আনন্দিত। এতদিনের আক্ষেপটা দূর করে তাদের খুশি করতে পেরেছি বলে ভালো লাগছে। তাদের ধন্যবাদ, অনেক টাকা খরচ করে তারা ভালো একটি দল গড়েছে।’

রূপালী ব্যাংকের বোলাররা যখন আবাহনীর ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলেছিল। তখন ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন জাহানার। ব্যাট হাতে অপরাজিত ২০ রানের ইনিংস খেলে মাঠও ছাড়েন অভিজ্ঞ নারী এই পেসার। শুধু তাই নয়, ছক্কার মাধ্যমে তিনি জয়ের বন্দরে পৌঁছান। যদিও কৃতিত্বটা সবার মাঝেই ভাগ করে দিতে চাইছেন আবাহনী অধিনায়ক, ‘কৃতিত্ব শুধু আমার নয়, আমার অপরপ্রান্তে থাকা জান্নাতুলের ভূমিকাও রয়েছে। ম্যাচের দুই বল বাকি থাকতে জয়, ব্যাপারটাই অন্যরকম। চতুর্থ বলে ছক্কা হবে কিনা নিশ্চিত ছিলাম না, লক্ষ্য ছিল উড়িয়ে মারবো। কেননা ওই মুহূর্তে বেশ চাপে ছিলাম।’

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে কার্টেল ওভারে গড়ায়। ২৭ ওভারের নির্ধারিত ম্যাচটিতে আগে ব্যাটিং করে রূপালী ব্যাংক ৯ উইকেটে তোলে ১০১ রান।

জবাবে ম্যাচের ২ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আবাহনী। রুমানা আহমেদের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে আবাহনীর শিরোপা খরা কাটান জাহানারা। ১৫ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন তিনি।