আরও একটি ফাইনাল, আরও একটি স্বপ্ন

ভারতের বিপক্ষে আরও একটি ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশতর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। তবুও একটি আক্ষেপ দীর্ঘদিন ধরেই বয়ে বেড়াচ্ছে লাল-সবুজের এই দল। শিরোপা জেতার সুযোগ ২০০৯ সালে প্রথমবার এসেছিল। কিন্তু লঙ্কানদের বিপক্ষে হেরে ফাইনালে জেতার স্বপ্নটা গুঁড়িয়ে যায় বাংলাদেশের। এরপর একে একে আরও তিনটি ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। যার একটিও জিততে পারেনি। রবিবার আরও একটি ফাইনালের মঞ্চে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। উত্তেজনায় ঠাসা এমন ম্যাচে চোখ রাঙাচ্ছে অতীত পরিসংখ্যান। কারণ, ফাইনাল মানেই যেন স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। ফাইনাল মানেই যেন হৃদয়ের রক্তক্ষরণ। এবারও কি বেদনার রঙে নীল হতে হবে গোটা বাংলাদেশকে? নাকি ইতিহাস নতুন করে লিখবে টাইগাররা। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হতে যাওয়া লড়াই শেষে এর জবাব পাওয়া যাবে।

পাঠকদের জন্যে এবার তুলে ধরা যাক বেদনার সব ফাইনাল। একটু পেছনে ফিরে দেখা যাক :

২০০৯ সালে স্বাগতিক বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল ত্রিদেশীয় সিরিজ। সাকিবের অসাধারণ পারফরম্যান্সে সেবার ফাইনাল খেলেছিল লাল-সবুজরা। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় স্বপ্নপূরণ হয়নি। ১৫৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল লঙ্কানরা। বাংলাদেশ যখন জয়ের আনন্দের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন মুরালিধরনের ব্যাটিংয়ে প্রথমবারের মতো ট্রফি হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।

২০১২ সালের এশিয়া কাপে আরও একবার শিরোপা জেতার সুযোগ হয়েছিল বাংলাদেশের। ওই ফাইনালে সাকিব-তামিম মুশফিকের কান্নায় ভেসে যায় মিরপুর থেকে শুরু করে ৫৬ হাজার বর্গমাইল। আগে ব্যাটিং করা পাকিস্তানকে ২৩৬ রানেই থামিয়ে দেয় বাংলাদেশ। সাকিবের ৬৮ ও তামিমের ৬০ রানের পরও লক্ষ্য ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষদিকে মাশরাফি ও মাহমুদউল্লাহ লড়াই করলেও জয়ের জন্য তা যথেষ্ট হয়নি। দুই রানের হার নিয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশকে অপেক্ষায় থাকতে হয়।

দুটি শিরোপা হারিয়ে ২০ ওভারের ক্রিকেটে টাইগারদের সামনে সুযোগ এসেছিল ২০১৬ এশিয়া কাপের শিরোপা জেতার। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটিতে হার মানে বাংলাদেশ। স্নায়ুচাপ এবারও উতরাতে পারেনি বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ১৫ ওভারে ১২০ রান তোলে। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত ৭ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটে জয় পায়।

সর্বশেষ শিরোপা বঞ্চিত ফাইনালটি হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচটিতে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের ২২১ রানে অলআউট করেও জিততে পারেনি স্বাগতিক বাংলাদেশ। ৫৩ বল আগেই ১৪২ রানে অলআউট হয়। মাহমুদউল্লাহর ৭৬ রান ছাড়া কেউই বড় স্কোর গড়তে পারেনি।

রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ তাদের পঞ্চম ফাইনালে খেলতে যাবে। কিন্তু এই ফাইনালের আগে আরও একবার দুর্ভাবনাও মনে উঁকি দিচ্ছে। আবারও কি স্বপ্নভঙ্গ হবে? নাকি নতুন কোনও ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ। সাকিব অবশ্য নির্ভার থেকেই ফাইনাল খেলতে চান, ‘আমরা চেষ্টা করছি যতটা নির্ভার থাকা যায় এবং খোলা মনে থাকা যায়। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভালো করার জন্য নির্ভার থাকাটা খুবই জরুরি। চাপ হিসেবে চিন্তা করলেই চাপ; আর না চিন্তা করলে চাপ না। আমি নিশ্চিত সবাই অনেক নির্ভার আছে।’

একনজরে পরিসংখ্যান

১. দুই দল টি-টোয়েন্টিতে অষ্টমবারের মতো মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। সাতবারই জিতেছে ভারত।

২. আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ১১ ম্যাচের ৯টিতেই জিতেছে ভারত। এই ভেন্যুতে সবশেষ তিন ম্যাচে বিজয়ী তারাই।

৩. ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছে ভারত। ৪০টি ম্যাচের ২৯টিতেই জয় তাদের।

৪. নিদাহাস ট্রফিতে ৬ ম্যাচের ৫টিতে জিতেছে রান তাড়া করা দল।

৫. নিদাহাস ট্রফিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ওয়াশিংটন সুন্দর। নিয়েছেন ৭টি। এমনকি মিতব্যয়ী বোলারও তিনি।