ডিমেরিট পয়েন্ট সিস্টেম কী?

ডিমেরিট পয়েন্ট সিস্টেমঅশ্লীল গালাগাল, এরপর তেড়েফুঁড়ে আসলেন আরেকজন। উত্তেজনাকর এমন পরিস্থিতিতে হাতাহাতিও হতে পারে যদি আম্পায়ার দেয়াল হয়ে না দাঁড়ান। ক্রিকেট মাঠে হরহামেশাই দেখা মেলে এমন কদর্যতার। তাই বলে ভদ্রলোকের খেলায় এমন কাণ্ড বাঁধিয়ে বসবেন ক্রিকেটাররা?

এর জবাব হয়তো নেই আইসিসির কাছে। তারপরেও হিট অব দ্য মোমেন্টে মেজাজ হারিয়ে বসছেন অনেকে। এমনকি আগ্রাসী হতেও দেখা যায় কোচকে।

ক্রিকেটে এমন আগ্রাসী মেজাজকে নিয়ন্ত্রণ করতেই ২০১৬ সালে অভিনব এক পন্থা বার করেছিল সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি।

গত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর চালু হয়েছে ডিমেরিট পয়েন্ট সিস্টেম। নতুন এই পদ্ধতির ব্যবহার এখন প্রায়ই দেখা মিলছে ২২ গজের ক্রিকেটে।

শুধু ক্ষিপ্র মেজাজের কারণেই ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হচ্ছে না।  ক্রিকেটীয় ভদ্রতা ভঙ্গ হলেও ডিমেরিট পয়েন্টের খড়গ নেমে আসতে পারে যে কোনও সময়। এমনকি ছোট ছোট অভিযোগেও নিষিদ্ধ হতে পারেন কে যে কেউ!

শুধু ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেই নয়, শাস্তি নেমে আসতে পারে কোচদের ক্ষেত্রেও! যেমন দুবাইয়ে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ডাগআউটে বসে নিজ দলের ফিল্ডারকে লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করে বসেছিলেন তাদের আরব আমিরাত কোচ ওয়াইজ শাহ। আর তাতে এক ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয় এই কোচকে।

মাত্রা অনুযায়ী চালু হওয়া এই ডিমেরিট পয়েন্ট পদ্ধতি সবশেষ আলোচনায় এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা পেসার কাগিসো রাবাদার কল্যাণে। দুই টেস্টের নিষেধাজ্ঞা পেলেও শুনানিতে বেঁচে যাওয়ায় তা বাতিল করেছে আইসিসি।

এমন অবস্থায় এই পদ্ধতির খুঁটিনাটি তুলে ধরা হলো পাঠকদের কাছে-

ডিমেরিট পয়েন্ট পদ্ধতি কীভাবে কাজ করে-

আইসিসির লক্ষ্য ছিল বার বার একই অপরাধ করলে তার শাস্তি কীভাবে দেওয়া যাবে সেটি প্রচলন করা। সেই লক্ষ্য থেকে ডিমেরিট পয়েন্ট পদ্ধতি চালু। আচরণবিধি অনুযায়ী চার মাত্রার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই ডিমেরিট পয়েন্টগুলো দেওয়া হয়। প্রত্যেক মাত্রার আবার আলাদা পয়েন্ট রয়েছে। বেশি মাত্রা হয়ে গেলেই নিষেধাজ্ঞার হুমকি বেশি।

এই শাস্তি কীভাবে কার্যকর হয়?

অনফিল্ড আম্পায়ারই অপরাধগুলো ম্যাচরেফারির নজরে আনেন। এরপর সিদ্ধান্তই হয় কোন মাত্রায় অভিযোগ আনা যেতে পারে। তারপর সেই অনুযায়ী ডেমেরিট পয়েন্ট। অবশ্য এর বিরুদ্ধে আপিল করারও সুযোগ রয়েছে। এই সুবিধাতেই নিষেধাজ্ঞা বাতিল হয়েছে রাবাদার।

আগের বিধি থেকে এর পার্থক্য কী?

আচরণবিধি অনেক দিন ধরে থাকলেও পয়েন্ট পদ্ধতি চালু হওয়ায় ছোট ছোট অভিযোগের কারণেও এখন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে। যেমন ক্ষুদ্র অপরাধে ১ পয়েন্ট করে যোগ হতে হতে চার পয়েন্ট হলেই চলে আসবে নিষেধাজ্ঞা।

কার কত ডিমেরিট পয়েন্ট কীভাবে জানা যাবে?

আইসিসির ওয়েব সাইটেই তালিকা রয়েছে। সেখান থেকে জানা যাবে বিস্তারিত।

ডিমেরিট পয়েন্ট সিস্টেম

অপরাধের মাত্রা

ডিমেরিট পয়েন্ট

শাস্তি

১-২

 

৩-৪

একটি টেস্ট অথবা দুটি ওয়ানডে অথবা ২টি-টোয়েন্টি

৫-৬

 

৭-৮

২টি টেস্ট অথবা ৪টি ওয়ানডে অথবা ৪টি-টোয়েন্টি

  • পয়েন্ট কার্যকর থাকে ২৪ মাস