রাজশাহীতে বিশ্বকাপের উন্মাদনা

দর্জির দোকানে চলছে পতাকা বানানোর প্রস্তুতিদরজায় কড়া নাড়ছে রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপকে ঘিরে দেশে দেশে চলছে ব্যাপক উৎসাহ-উন্মাদনা।  ফুটবলকে ঘিরে উন্মাদনার জোয়ারে পিছিয়ে নেই বিভাগীয় শহর রাজশাহীও।  টুর্নামেন্ট শুরুর একমাস আগে ফুটবলপ্রেমীদের চলছে প্রস্তুতি। দূরে থেকে নিজ ঘরে বসে টেলিভিশনের পর্দায় খেলা উপভোগ করার আগে ফুটবলপ্রেমীরা বিশ্বকাপের ছোঁয়া পেতে কিনছেন পছন্দের দেশের পতাকা ও জার্সি।

রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে বেশ কয়েকটি দোকানে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, জার্মানিসহ অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পতাকা-জার্সি মান ও পরিমাপ ভেদে বিক্রি হচ্ছে। আবার স্থানীয় পর্যায়ে এসব ভিনদেশি পতাকা তৈরি করছে দর্জিরা।

রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার এলাকায় আবদুল্লাহ হেল বাকি সন্সের কর্মচারী উজ্জ্বল সেই উন্মদনার বর্ণনা দেন এভাবেই, ‘আমাদের দেশ ফুটবল বিশ্বকাপে নেই। তবে অনেকে ফুটবল বিশ্বকাপের অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পতাকা ক্রয় করার পাশাপাশি আমাদের লাল-সবুজ পতাকাও ক্রয় করছেন। এজন্য বাংলাদেশের পতাকাও তৈরি করছি। প্রতিদিন বড় মাপের পতাকা ২০টি ও ছোট মাপের পতাকা ৪০টি তৈরি করছি।’

পতাকার মূল্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘৩৬/৬০ ইঞ্চি মাপের বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা ও জার্মানির পতাকা ১৩০ টাকা।  ব্রাজিলের পতাকা ১৫০ টাকা।  আর বাংলাদেশের ছোট মাপের পতাকা ২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।’

বানানো পতাকা শোভা পাচ্ছে দোকানেবিশ্বকাপ এলেই দেখা মেলে এমন ভক্তের- যিনি পছন্দের দলের পতাকা টাঙিয়ে রাখেন বাড়ির ছাদে।  তেমনই এক ভক্ত রাজশাহী নগরীর সাধুর মোড় এলাকার মো. রুবেল।  আগ্রহের সঙ্গেই জানান, তিনি আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের ভক্ত। তাই আর্জেন্টিনা দলের পতাকা কিনে টাঙিয়ে রাখবেন বাড়ির ছাদে।

রাজশাহী নগরীর চন্ডিপুর এলাকার আজেন্টিনা সমর্থক শরিফুল ইসলামও একই কথা জানান, ‘ম্যারাডোনার খেলা দেখে আমি আর্জেন্টিনাকে সমর্থন করি। কিন্তু পর্যায়ক্রমে এখন আমার পুরো পরিবারই আর্জেন্টিনা সমর্থক। এজন্য আমার বাড়ির ছাদে আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙিয়েছি। সেই সাথে আমাদের বাংলাদেশের পতাকাও বাঁশের উপরে টাঙানো আছে।’

তিনি জানান, বাঁশসহ চারটি পতাকা টাঙানোতে খরচ হয়েছে ১৩০০টাকা।  পরিবারের জন্যে আর্জেন্টিনার মোট চারটি জার্সি কিনতে খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা।

ছাদে এভাবেই বাঁশ দিয়ে পতাকা টাঙিয়েছেন অনেকেআর্জেন্টিনা সমর্থকদের মতো পিছিয়ে নেই রাজশাহী নগরীর তেরখাদিয়া এলাকার ব্রাজিল সমর্থক জেড এম সাকি রহমান।  দলের পক্ষে সমর্থন বাড়াতে প্রচারণা চালাচ্ছেন ফেসবুকে, ‘আমরা ফেসবুকে দলের সমর্থন বাড়ানোর জন্য এখন থেকে আর্জেন্টিনাসহ প্রতিপক্ষ দলগুলোকে ঘায়েল করতে স্ট্যাটাস দিচ্ছি। এখনও পতাকা ক্রয় করা হয়নি। তবে শিগগিরই একটি ব্রাজিলের পতাকা বাড়ির ছাদে টাঙানো হবে।’

শুধু পতাকা ও জার্সির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই রাজশাহীর ফুটবলপ্রেমীরা।  ফুটবল খেলা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সরাসরি উপভোগ করার জন্য অনেকে টেলিভিশন ক্রয় ও মেরামত করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। নগরীর রেলগেট এলাকার টেলিভিশন বিক্রেতা মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল জানান, ‘এখন তো সবার বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে। তারপরও যাদের নেই তারাও বিশ্বকাপ উপলক্ষে টেলিভিশন ক্রয় করছে। আসলে ফুটবলটা আমাদের দেশের মানুষে হৃদয়ে।’