বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের ছয় লড়াই

বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই যেন পাকিস্তানের অসম্ভবের এক মঞ্চ। এখন পর্যন্ত ৬ বার বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছে দল দুটি। অথচ সব গুলোতেই জয় ভারতের। এমনকি আজকের ভেন্যু ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ১৯৯৯ বিশ্বকাপেও মুখোমুখি হয়েছিলো দল দুটি। সেখানেও ভারত জয় পেয়েছিল ৪৭ রানের।   

এবার দেখে নেওয়া যাক বিশ্বকাপে ভারত ও পাকিস্তানের সেই ৬টি মহারণ:

জাভেদ মিঁয়াদাদের লাফ দেওয়া উদযাপন।১৯৯২ বিশ্বকাপ:

১৯৯২ বিশ্বকাপেও এবারের মতো রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে খেলা হয়েছিলো। সিডনিতে ভারত পাকিস্তানকে ৪৩ রানে হারালেও ম্যাচের মূল আকর্ষণ ছিলো জাভেদ মিঁয়াদাদকে ঘিরে। বিশেষ করে মাঠে তার অস্বাভাবিক দেহভঙ্গির জন্য আলোচনা ছিলো বেশি। ভারতীয় উইকেট কিপার কিরন মোরের বার বার আপিলে বিরক্ত হয়ে ক্যাঙ্গারুর ভঙ্গিতে লাফিয়ে ব্যঙ্গ করে জবাব দেন তার।   

ভারত শুরুতে ৪৯ ওভারে ৭ উইকেটে ২১৬ রান সংগ্রহ করেছিলো। জবাবে পাকিস্তান ৪৮.১ ওভারে গুটিয়ে যায় ১৭৩ রানেই।

ভারতের জয় সবগুলোতেই। ১৯৯৬ বিশ্বকাপ:

এখনকার টি-টোয়েন্টির যুগের আগেই ভারতের হয়ে সেবার বারুদে ব্যাটিং উপহার দিয়েছিলেন অজয় জাদেজা। বেঙ্গালুরুতে ওয়াকার ইউনিসের মতো সুইং তারকার বোলিংকে থোরাই কেয়ার করেছিলেন সেবারের বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে। তার শেষ দুই ওভারে ৪০ রান নিয়েছিলেন জাদেজা। ২৫ বলে করেছিলেন ৪৫ রান! তাতে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছিল ৮ উইকেটে ২৮৭ রান। এত বড় সংগ্রহ পাকিস্তান পার করতে পারেনি। ৪৯ ওভারে ২৪৮ রান তুলতে পারে পাকিস্তান। পাকিস্তান হেরে যায় ৩৯ রানে।

এক প্রসাদের বোলিংয়েই গুঁড়িয়ে যায় পাকিস্তান।১৯৯৯ বিশ্বকাপ:

এই বিশ্বকাপেও ম্যাচের বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিলো কারগিল যুদ্ধ। এমন রাজনৈতিক বৈরিতার মাঝেও ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ম্যাচটি নির্বিঘ্নেই হয়েছিল। শুরুতে ভারত ৬ উইকেটে সংগ্রহ ২২৭ রান। জবাবে ভারতীয় পেসার প্রসাদ কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ। ২৭ রানে নেন ৫ উইকেট নিলে ৪৫.৩ ওভারে ১৮০ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ভারত ম্যাচ জেতে ৪৭ রানে।

২০০৩ সালে শচীনের গড়ে দেওয়া মঞ্চেই জয় পায় ভারত। ২০০৩ বিশ্বকাপ:

২০০৩ বিশ্বকাপেও ছিলো ভারতের একক আধিপত্য। সেঞ্চুরিয়নে ভারতীয় মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকারের ৯৮ রানের ইনিংসই জয়ের মঞ্চ গড়ে দেয় ভারতকে। এই ম্যাচে শোয়েব আখতারকে পাত্তাই দেননি শচীন।

শুরুতে সাঈদ আনোয়ারের সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ২৭৩ রান করে পাকিস্তান। জবাবে ভারত ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৫.৪ ওভারেই জয়ের মঞ্চে নোঙর ফেলে।

২০১১ বিশ্বকাপে অনেকবার জীবন পেয়েছিলেন শচীন।২০১১ বিশ্বকাপ:

ভারতের মাটিতে হওয়া এই বিশ্বকাপেও পাকিস্তান ছিলো বাক্সবন্দী। বিভিন্ন বিতর্কিত কাণ্ডের জন্ম দিলেও সেমিফাইনালের ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতেছে ভারতই।

তবে শচীন টেন্ডুলকারের চার জীবন পাওয়া ম্যাচে সমালোচনা কম হয়নি শহীদ আফ্রিদিকে নিয়ে। ২৭, ৪৫, ৭০ ও ৮১ রানে চারবারের তিনবারই আফ্রিদির বলে ক্যাচ উঠেছিলো। যেই ব্যর্থতার পর দেশের কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন আফ্রিদি।

টেন্ডুলকারের ৮৫ রানের সর্বোচ্চ স্কোরে ভর করে ৯ উইকেটে ২৬০ রান তুলেছিলো ভারত। পাকিস্তান ৪৯.৫ ওভারে ২৩১ রানে অলআউট হলে ২৯ রানের জয় নিয়ে ফাইনালে উঠে স্বাগতিকরাই।

২০১৫ বিশ্বকাপের জয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি।২০১৫ বিশ্বকাপ:

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই বিশ্বকাপে শচীনের ছায়া থেকে অবশেষে বের হয়ে আসেন বিরাট কোহলি। তার ১২৬ বলে করা ১০৭ রানের ইনিংসে পাকিস্তানের পেস আক্রমণকে সাধারণের কাতারে নামিয়ে আনেন কোহলি। তাতে ৭ উইকেটে ৩০০ রানের বড় পুঁজি পায় ভারত। পাকিস্তান ৪৭ ওভারে ২২৪ রানেই গুটিয়ে গেলে ৭৬ রানের বড় জয় পায় ভারত।