রুহুল আমিন জানিয়ে দিলেন, বাফুফের সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন তরফদার রুহুল আমিন। আগামী এপ্রিলে বর্তমান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের(বাফুফে)বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। নতুন মেয়াদে সভাপতি পদে তরফদার মো: রুহুল আমিন অনেকদিন ধরেই নির্বাচন করার ইচ্ছা পোষণ করে ‘শো-ডাউন’ করে আসছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের দুই মাস আগে এই সংগঠক হঠাৎই ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে সরে দাঁড়ালেন! আজ সোমবার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিন বলেছেন, বাফুফের সভাপতি পদে তিনি নির্বাচন তিনি করছেন না।

তরফদার রুহুল আমিন প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে দুটি ক্লাবের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। সাইফ স্পোর্টিং ও চট্টগ্রাম আবাহনী। এছাড়া তিনি জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। মহাখালীতে তার অফিসে ক্লাব ও জেলা এবং বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পাশে রেখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।

শুরুতে সভাপতি পদে নির্বাচন না করার বিষয়ে রুহুল আমিন বলেছেন, ‘দুটি অ্যাসোসিশেয়ন থেকে আমাকে সভাপতি পদে নির্বাচন করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কারণ তখন আমরা জেনেছি বর্তমান সভাপতি আর নির্বাচন করবেন না। পরে জানতে পারলাম বর্তমান সভাপতি যিনি আছেন তিনি চতুর্থবারের মতো নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদিও তিনি আগে বলেছিলেন নির্বাচন করবেন না। তখন আমরা দেখলাম ফুটবলে তথা ক্রীড়াঙ্গনে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচন করবো না।’

সভাপতি পদে নির্বাচন না করলেও অন্য পদে নির্বাচন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি, ‘আমি ফুটবলের ভালো চাই। ফুটবল এগিয়ে যাক। ফুটবলকে নিয়ে অনেক কাজ করার আছে। নির্বাচনকে ঘিরে যে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে সেখান থেকে মুক্তি পেতে চাই। যে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে তা আমাদের কারও জন্য মঙ্গল না। ওই একটা পদেই আপাতত আমি নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে অন্য যে পদগুলো আছে সেগুলো ক্লাব এবং জেলা ও বিভাগ অ্যাসোসিয়েশন ঠিক করবে। তারা নিশ্চয়ই একটি সুন্দর প্যানেল দেবে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই ফাইনাল হবে।’

সভাপতি পদে নির্বাচন প্রসঙ্গে কোনও চাপ আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে রুহুল আমিন বলেছেন, ‘কোনও চাপ নেই। ফুটবলের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। ফুটবলকে একটি ভালো জায়গায় নেওয়ার জন্য। ফুটবলের যে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে তা কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়।’

বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে সমর্থন দেওয়া প্রসঙ্গে তার কথা, ‘সাপোর্ট মানে কী? আমাদের তো দুটি ক্লাব আছে। ক্লাব দুটি বাফুফের স্টেক-হোল্ডার। উনারা তো সাপোর্ট দিচ্ছেন। প্রশাসনিক সাপোর্ট তো থাকবেই। এখন উনি কী করবেন তার বিষয়। আমি করবো না। এটা নিশ্চিত। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।’

আপনি কেন সরে যাচ্ছেন এ প্রশ্নে রুহুল আমিন বলেছেন, ‘ফুটবলে ব্যাপক অস্থিরতা। নির্বাচনকে ঘিরে। বিভিন্ন কথা আসছে। সব পক্ষ থেকে কথাবার্তা আসছে। তাই আমি চিন্তা করে দেখলাম এটা আসলে আমাদের ফুটবলের উন্নতির জন্য শুভ নয়।ব্যক্তিগতভাবে ফিল করছি। অস্বস্তির মধ্যে নির্বচন করা ঠিক হবে না। ২১টি পদ আছে। সভাপতি একটি পদ। অন্য পদও আছে। জেলা ও বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের দক্ষ সংগঠক আছে। একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নেবে। দিনশেষে আমরা ফুটবলের পক্ষেই কাজ করছি।’

চট্টগ্রামে মেয়র পদে আ জ ম নাছিরুদ্দিন মনোনয়ন পাননি। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোটা ওটার সঙ্গে সম্পর্কিত কি না এমন প্রশ্নে রুহুল আমিনের পরিষ্কার উত্তর, ‘ ওটা রাজনৈতিক ইস্যু। আর  আমার এটার সঙ্গে কোনও মিল নেই। সম্পর্ক নেই।’

নির্বাচনে সমর্থন প্রসঙ্গে তার উত্তর, ‘নির্বাচন হলো গনতান্ত্রিক অধিকার। যে কেউ দাঁড়াতে পারে। আরও প্রার্থী আসতে পারে।এই মুহূর্তে সমর্থন দেবো কিনা বলতে পারবো না। তবে ফুটবল থেকে সরে যাচ্ছি না। আমার ক্লাব আছে। একাডেমি আছে। যেহেতু অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে, সেখান থেকে সরে এসেছি। এটা সাময়িক।’