আলা নাসেরের চোখে এ এক অকল্পনীয় ঢাকা

মিসরীয় ফুটবলার এলদিন আলা নাসেরকরোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না বললেই চলে। যে ঢাকাকে মানুষ চিনত, সেই কোলাহলপূর্ণ  নগরী  এখন নীরব। যেখানে একজনের শরীরে সঙ্গে অন্যজন প্রায় সেঁটে থাকতো, সেখানে কিনা রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা! এমন ঢাকা যে কবে দেখা গেছে তা খুঁজে বের করা কঠিন। এ যেন এক অচিনপুরি! অন্য সবার মতো বিদেশিরা এমনটি দেখে অবাক। আবাহনী লিমিটেডের মিসরীয় ডিফেন্ডার আলা এলদিন নাসের তো এমন ঢাকা কল্পনাই করতে পারছেন না।

আবাহনীর ক্লাবের একেবারেই কাছে তার ফ্ল্যাট। সেখানে স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বসবাস করেন আলা। ফ্লাট থেকে ক্লাবের মাঠে আসতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু এর আগে যখনই এসেছেন, অজস্র মানুষের ভিড় দেখেছেন।  ঢাকার যানজট আর বায়ুদুষণে কিছুটা অভ্যস্তও হয়ে উঠছিলেন।

কিন্তু করোনাভাইরাস এসে চিত্রই পাল্টে দিয়েছে। এর প্রভাবে শুনশান এক নগরী ঢাকা। এমনটি দেখে নাসের নিজেই অবাক, ‘সবসময় আমি লোকজনের সমাগম দেখে আসছি। মাঠ কিংবা যে জায়গায় যাই না কেন সবখানেই কোলাহল ছিল দেখার মতো। কিন্তু এবার করোনার কারণে দৃশ্যপট একদমই বদলে গেছে। কোথাও কোনও যানজট নেই। রাস্তা-ঘাটে মানুষও নেই বললেই চলে। পরিবেশও চমৎকার। আমি আসলেই অবাক।’

নিজের বাসা  থেকে মাঝে-মধ্যে ক্লাবে  জিম করতে এসে চারদিকের নীরবতা লক্ষ্য করেছেন। তবে করোনার কারণে কোনও ঝুঁকি নিচ্ছেন না আলা। ফ্ল্যাট থেকে ক্লাবে এসে জিম করেন। তারপর ফিরে গিয়ে স্ত্রী ও বাচ্চাকে সময় দেন। তবে এমন অবস্থায় কিছুতেই ভালো লাগছে না নাসের ও তার স্ত্রীর।

আলা নিজেই বললেন, ‘খেলা ও অনুশীলনের ফাঁকে আগে আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া হতো। কিন্তু করোনার কারণে ফ্ল্যাটে বন্দি অবস্থায় আছি। এক বছরের ছেলের সঙ্গে দুষ্টুমি করেই সময় কাটছে। তবে আমার চেয়ে আমার স্ত্রী বিরক্ত বেশি। মাঝেমধ্যে তো ও রাগই করে। ফ্ল্যাট থেকে যে বেরোতে পারছে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছুই করার নেই। সারাবিশ্বের সমস্যা এটা।’

মিসরে নাসেরের পরিবারের অন্য সদস্যরা থাকে। ঢাকায় থাকলেও নাসেরের মন পড়ে আছে সেখানে। সুযোগ পেলেই সেখানে যেতে চান এই ডিফেন্ডার। তবে পরিস্থিতি যে অন্য কথা বলছে। নাসের চাইছেন দ্রুত সবকিছু স্বাভাবিক হোক, ‘আসলে এমন নীরবতা ভালো লাগছে না। যত দ্রুত সম্ভব আবার আগের দিনগুলোতে ফিরে যেতে চাই। সেটা ঢাকা কিংবা আমার দেশে। সবাই যেন করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকতে পারে,সুস্থ থাকতে পারে।’