তাসকিনের জন্মদিনের উপহার ‘ভাড়াটিয়ার বাড়িভাড়া মওকুফ’

তাসকিন ও তার বাবা বাংলাদেশের ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদের বাবা আবদুর রশিদ মঙ্গলবার মোহাম্মদপুরের স্থানীয় কিছু অভাবী মানুষকে ত্রাণ দিয়ে এসে বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।  তাসকিন তখনই বাবাকে বলে ভাড়াটিয়াদের এক মাসের বাড়িভাড়া মওকুফ করে দিয়েছেন। বাবার কাছ থেকে এটাই নাকি তার জন্মদিনের উপহার!

করোনাভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়ায় রাজধানীর ভাড়াটিয়াদের বাড়িভাড়া মওকুফ করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র  আতিকুল ইসলাম। মেয়রের কথায় প্রভাবিত হয়েই তাসকিন বাবাকে দিয়ে মহৎ একটি কাজ করিয়ে নিলেন। 

মোহাম্মদপুরে কয়েক বছর আগে অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন তাসকিন। বর্তমানে সেখানেই থাকছেন তারা। এছাড়া তাসকিনের বাবার মোহাম্মদপুর জাকির হোসেন রোডে এবং  বসিলায় দুটি বাড়ি আছে। সেই বাড়িতে ভাড়া থাকেন ১১টি পরিবার।  সবগুলো পরিবারের একমাসের ভাড়া মওকুফ করে দিয়েছেন তাসকিনের বাবা।

ছোটবেলার তাসকিনের বহু আবদারে রেগে যেতেন। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে মোহাম্মদপুরের বাসায় ছেলের আবদার শুনে একটুও রাগ করেননি তিনি। বরং খুশি মনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জাতীয় দলের পেসারের বাবা, ‘মোহাম্মদপুরে কিছু ত্রাণ দিয়ে আসার পর বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। তাসকিন এসে বলে, আব্বু একটা কথা রাখবা? আমি বললাম, বলো। সে বলে তুমি তোমার ভাড়াটিয়াদের জন্য এক মাসের ভাড়া মওকুফ করে দাও। আমি বললাম, তুমি খুশি হলে দেবো। আমার যেহেতু সামর্থ্য আছে, আমি করলাম। ছেলে তো আমাদের একটাই, ওর জন্য তো করতেই হবে। ও তো আর খারাপ কিছু আবদার করেনি। ভালো একটা জিনিস চেয়েছে, আবদার না রেখে কি আর পারা যায়? এরপর সে নিজ থেকেই বলে, এটা তার জন্মদিনের গিফট।’

আগামী শুক্রবার ২৫ বছর পূর্ণ হবে তাসকিনের। প্রতিটি জন্মদিনেই ক্রিকেটার ছেলেকে নানারকম উপহার দেন আবদুর রশিদ।তবে এবারের জন্মদিনে বাবার কাছে ব্যতিক্রমী এক উপহার তাসকিন নিজেই চেয়ে নিলেন। তাসকিন বললেন, ‘সাধারণ মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার আছে তারা কারো কাছেই কিছু চাইতে পারে না। বাড়ি ভাড়া বাবদ আমার আব্বু এক লাখ টাকার মতো পান। আব্বুকে অনুরোধ করি যে এবার আমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে সেই ভাড়া যেন তিনি মাফ করে দেন। আব্বা আমার কথায় রাজি হয়ে যান।’

তাসকিনের বাবা আবদুর রশিদ ছেলের কথায় এই কাজটা করতে পেরে দারুণ তৃপ্ত, ‘কারও জন্য কিছু করতে পারার অনুভূতি অন্যরকম। আমার খুব ভালো লাগছে। নিজেকে খুব হালকা মনে হয়। তৃপ্তি কাজ করে। আমি মনে করি সমাজের সামর্থ্যবানদের আরও এগিয়ে আসা উচিত। তাহলেই আমরা সবাই মিলে করোনা মোকাবিলা করতে পারবো।’