ক্ষমাসুন্দর ইমরুল

ইমরুল কায়েসগত ২৩ মার্চ মেহেরপুরের কাথুলি সড়কে নছিমন গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন ইমরুলের বাবা। প্রায় একমাস চিকিৎসা চললেও সুস্থ হয়ে ওঠেননি ইমরুলের বাবা  মোহাম্মদ বানি আমিন বিশ্বাস। গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রেই (আইসিইউ) মৃত্যু হয় তাঁর। তবে বাবার ঘাতক নছিমনের চালককে ক্ষমা করে বিরল দৃষ্টান্ত গড়লেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওপেনার ইমরুল কায়েস।

দুর্ঘটনার পর সেই গাড়ির চালক ও সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছিল মেহেরপুরের পুলিশ। কিন্তু ইমরুল কোনো মামলা না করে দোষীদের বিনাশর্তে ক্ষমা করে দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশকেও অনুরোধ করেন তাদের ছেড়ে দিতে।

বাংলা ট্রিবিউনকে ইমরুল বলেছেন, ‘আমাকে যখন জানানো হলো বাবার ঘাতক ও তার সহযোগী গ্রেপ্তার হয়েছে, আমি তাদের ডিটেইল শুনে পুলিশকে বললাম ওদের ছেড়ে দিতে। বললাম, আমি মামলা করবো না।’

ইমরুলের মুখে এমন কথা শুনে একটু বিস্মিতই হন স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা। ইমরুলের কাছে পাল্টা প্রশ্ন করলে জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘পুলিশ আমার জানতে চাইলো, কেন আমি মামলা করবো না, এত বড় ক্ষতি হলো?“আমি বললাম, অবশ্যই আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এই লোকটার শাস্তি হলে কি আমি আমার বাবাকে পাবো? লোকটা গরিব। ওর স্ত্রী-সন্তান আছে। ও জেলে গেলে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়বে। ওকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। আপনারা ওকে ছেড়ে দেন।”’

কেন নছিমনের চালককে ক্ষমা করে দিয়েছেন সেটির কারণ আবারও স্পষ্ট করে বাংলাদেশের হয়ে ৩৯ টেস্ট ও ৭৮টি ওয়ানডে খেলা ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘আমি আসলে তার পরিবারের কথা চিন্তা করেছি। চিন্তা করে দেখলাম যে, ওদের কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে আমি তো শান্তি পাবো না, আবার আমার বাবাকেও আমি ফিরে পাবো না। এসব চিন্তা করেই আসলে পুলিশকে অনুরোধ করেছি ছেড়ে দিতে। শুধু শুধু একটি পরিবারের ক্ষতি করে তো লাভ নেই।’