১৯৯৭ সাল থেকে আশরাফুলের সঙ্গে ক্রিকেট-যাত্রা শুরু আশিকুরের। বিসিবি অনূর্ধ্ব-১৭ ও ১৯ দলে একসঙ্গে খেলেছেন দুজন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম বৈশ্বিক তারকা আশরাফুলের বাল্যবন্ধু। সেই বন্ধুত্ব এখনও অটুট। ২০০৭ সালে ক্রিকেট ছেড়ে দিয়ে কোচিংকেই পেশা বানিয়ে নেন, যোগ দেন বিসিবিরর ডেভেলপমেন্ট কোচ হিসেবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সময়টাতে নিজের এলাকা বাসাবোতে দুস্থদের মধ্যে ত্রান বিতরণ করতে গিয়েই আক্রান্ত হন করোনায়। গত ১২ মে আশিকের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ছিলেন আইসোলেশনে। এরপর ১৮ মে ও ২৬ মে পর পর দুটি পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েও অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে আছেন।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতেই বেশ কয়েকবার কাশলেন। শরীরে করোনাভাইরাস না থাকলেও এখনও কাশিটা যায়নি। ডাক্তারও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো নিয়ম মেনে পালন করে চলা আশিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘এখনও পুরোপুরি সুস্থ নই। কাশি আছে। শারীরিক দুর্বলতাও আছে। রিপোর্ট হয়তো নেগেটিভ এসেছে। করোনাজয় সেদিনই হবে, যেদিন বিশ্ব থেকে করোনা দূর হবে, করোনার টিকা আবিষ্কার হবে। সেদিন পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করে যেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শগুলো মেনে চললে মনে হয় পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবো।’
কী সেই পরামর্শ সেটাও জানালেন আশিক, ‘লং, আদা, দারুচিনি মিশিয়ে চা বারবার খেতে বলেছেন। মধু ও গরমপানি দিয়ে খেতে হবে। সঙ্গে প্রচুর পানি। কিছু ওষুধও দিয়েছেন, কাশির সিরাপের সঙ্গে কিছু ট্যাবলেট। এ ছাড়া প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলেছেন, যেমন-বাদাম, ডিম, চিকেন।’
বিসিবি ও সবার প্রতি কৃতজ্ঞ আশিক, ‘সবাইকে ধন্যবাদ। আমার পজিটিভ শোনার পর থেকে সবাই আমার খোঁজখবর নিয়েছেন। বন্ধু আশরাফুল থেকে শুরু করে সবাই চিন্তায় ছিলেন। আশা করি সবার ভালোবাসা ও দোয়ায় করোনা থেকে মুক্তি পাবো। এখন দুটো টেস্ট নেগেটিভ আছে। আশা করি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবো।’
নিজের করোনা-অভিজ্ঞতা থেকে অন্যদের জন্য কিছু পরামর্শও দিয়েছেন আশিক, ‘অবশ্যই মানসিক শক্তি বাড়াতে হবে। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। এই দুটোর সঙ্গে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেলেই আসলে করোনা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে যুব বিশ্বকাপে খেলা আশিক ১৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন, খেলছেন ১৮টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ। লাল বলে ৩৬টি ও সাদা বলে ২১ উইকেট আছে এই ডানহাতি পেসারের।
জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ ছিলেন দীর্ঘ সময়। এছাড়া ক্রিকেটের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট, বিসিএলে বিসিবি নর্থ জোন, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ওল্ড ডিওএইচএস ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ হিসেবেও যুক্ত আছেন। সর্বশেষ বিপিএলে রাজশাহী কিংসের সহকারী কোচ ছিলেন।