ইতালিতে সিভোরির ৫৯ বছর পর রোনালদো...

ফ্রি-কিক থেকে গোল করার মুহূর্তে রোনালদো। ছবি:টুইটারসেই কবে ‘বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে’…সর্বশেষ ১৯৬১ সালে ইতালিয়ান লিগ সিরি আ-তে ২৫ গোল করেছিলেন ওমার সিভোরি। তার ৫৯ বছর পর আবার সিরি আ একজনের ২৫ গোল দেখলো। এই ‘একজন’ জুভেন্টাসের পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো!

নামের পাশে ২৪ গোল নিয়ে শনিবার (৪ জুলাই) তুরিন ‘ডার্বি’তে নেমেছিলেন রোনালদো। ৬১ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে নিজের গোলসংখ্যা নিয়ে যান পঁচিশে। এর আগেই অবশ্য আরও দুই গোল করে ডার্বির সব উত্তেজনা শেষ করে দিয়েছেন পাওলো দিবালা ও হুয়ান কুয়াদ্রাদো। শেষ পর্যন্ত তুরিনোর সঙ্গে ৪-১ গোলে জিতেছে জুভেন্টাস। বড় জয়ের সঙ্গে বড় তৃপ্তি নিয়েই নিজেদের মাঠ ছেড়েছে জুভেরা। কারণ টানা নবম স্কুদেত্তোও যে ঘরে আসতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে পরের ম্যাচ এসি মিলানের কাছে লাৎসিওর ৩-০ গোলের হারে।

অথচ করোনাভাইরাস মহামারি গত মার্চে যখন ফুটবল বন্ধ করে দিলো, রোনালদোর জুভেন্টাসকে কী টেনশনেই না ফেলে দিয়েছিল লাৎসিও। ২৬ রাউন্ডের খেলা শেষে তাদের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে জুভেন্টাস। জুভেন্টাসের খেলায় হঠাৎ করেই একটু ভাটার টান পড়েছিল যেন।  বলাবলি হচ্ছিল বহুদিন পর জুভেন্টাস ও ইন্টারমিলানের বাইরে অন্য কোনও দল এবার হয়তো শিরোপা জিততে চলেছে।

কিন্তু যে দলে রোনালদোর মতো যোদ্ধা থাকেন, সেই দলের সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন। করোনার পর আবার খেলা শুরু হতেই রোনালদো স্বরূপে। টানা চার ম্যাচ জিতে শিরোপা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে জুভেন্টাস। সাত পয়েন্টের ব্যবধান হয়ে গেছে দুই দলের মধ্যে। ৩০ ম্যাচ শেষে জুভেন্টাসের পয়েন্ট ৭৫, লাৎসিওর ৬৮।

মনে হয় না রোনালদোকে আর থামাতে পারবে কেউ। তুরিনোর সঙ্গে যেমন ফ্রি-কিকে গোল পেয়ে গেলেন বহুদিন পর। জুভেন্টাসে এসে ৪৩তম প্রচেষ্টায় প্রথম ফ্রি-কিক গোল। সব মিলিয়ে যা ৪৬তম। ৩৫ বছর বয়সী পর্তুগিজ এর আগে ৩২ গোল করেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে, ১৩টি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে।

ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জয়ের লড়াইটাও এবার ছেড়ে দেওয়ার কোনও কারণই নেই। লিগে বাকি আরও আট ম্যাচ, চ্যাম্পিয়নস লিগ রয়েছে সামনে। দলের মধ্যেই গোল করার প্রতিযোগিতা না থাকলে হয়তো আরও এগিয়ে যেতেন। এখন প্রতি ম্যাচেই যেমন দিবালা তার ‘মুখের গ্রাস’ কেড়ে নিচ্ছেন। এ ম্যাচেও তার তিন মিনিটের গোলে এগিয়ে যায় জুভেরা, ২৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন হয় কুয়াদ্রাদোর গোলে, তারপরই রোনালদোর ফ্রি-কিক ম্যাজিক। চতুর্থ গোলটা প্রতিপক্ষের উপহার, ৮৭ মিনিটে আত্মঘাতী গোল জিজির। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে তুরিনোর পক্ষে গোলটি করেছিলেন বেলোত্তি।

স্বর্গীয় সিভোরির পাশে রোনালদোর নাম লেখানোর রাতে রেকর্ড করেছেন জিয়ানলুইজি বুফনও। এ ম্যাচ দিয়ে সবচেয়ে বেশি ৬৪৮তম সিরি আ ম্যাচ খেললেন।  ৪২ বছর বয়সী জুভেন্টাস গোলকিপার পেছনে ফেললেন মিলান কিংবদন্তি পাওলো মালদিনিকে।