তরফদারের প্রস্তাবে ফুটবল অঙ্গনে তোলপাড়

89551071_2832909416802628_2772917348284235776_nচট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান তরফদার রুহুল আমিন আগামী মৌসুমেই ঘরোয়া ফুটবলকে বিদেশি খেলোয়াড়মুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিদেশি খেলোয়াড় না থাকলে দেশি খেলোয়াড়েরা গোল পাবে, জাতীয় দল ভালো করবে-এই তার যুক্তি। সম্প্রতি এক অনলাইন টক শোতে তিনি বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীর কাছে এমন প্রস্তাব রেখেছেন। তার এই প্রস্তাব নিয়ে ফুটবল অঙ্গনে তোলপাড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক চলছে। অনেক সমালোচনা হচ্ছে। ফুটবল সংগঠকেরা তার কথার সঙ্গে একমত নন।

উন্নত কোনও বিশ্বেই বিদেশি ফুটবলার ছাড়া লিগ হয় না। এছাড়া পাশের দেশ ভারতের আইএসএলে তো বিদেশি ফুটবলারের ছড়াছড়ি। তারপরেও তারা ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০০ এর আশপাশে থাকছে। তাই হঠাৎ করে তরফদার রুহুল আমিনের মুখে বিদেশি খেলোয়াড়মুক্ত লিগ আয়োজনের কথায় সবাই হতবাক।

শেখ জামাল ধানমন্ডির ম্যানেজার আনোয়ারুল করিম হেলাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন,‘আমি কোনোমতেই বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া লিগ খেলতে ইচ্ছুক না। অনেক সময় বিদেশিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলতে হয়। তবে, হ্যাঁ, বিদেশি খেলোয়াড়ের সংখ্যা কমতে পারে। তাই বলে সম্পূর্ণ দেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে খেলা ঠিক হবে না।’

আবাহনী লিমিটেডের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু বিদেশি ছাড়া লিগ খেলতে আগ্রহী নন,‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোনও একসময় বিদেশি খেলোয়াড় নাও থাকতে পারে। কিন্তু এই বলে পুরো মৌসুমে বিদেশি খেলোয়াড় থাকবে না, এটা আসলে ঠিক হবে না। কেননা বিদেশিরা না থাকলে স্থানীয়দের পারফরম্যান্স করে দেখাতে হবে, সেরকম কোয়ালিটি খেলোয়াড় তো থাকতে হবে। এছাড়া তাদের কোয়ালিটি বাড়াতে হবে। আর হঠাৎ করে তো কোয়ালিটি স্ট্রাইকার বেরোবে না। আর বিদেশিদের সঙ্গে খেললে তখন নিজেদের মানও বাড়ে।’

জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার আলফাজ আহমেদ বলেছেন,‘বিদেশি খেলোয়াড় একদম থাকবে না, এটা তো চাইলেই সম্ভব না। আমি মনে করি,বিদেশি খেলোয়াড়ের পাশাপাশি একজন স্থানীয় স্ট্রাইকার খেলানো বাধ্যতামূলক হোক। এই ধারা অব্যাহত থাকলে তখন ভবিষ্যতে ভালো স্ট্রাইকার বেরিয়ে আসতে পারবে। জুনিয়র খেলোয়াড়েরাও উৎসাহিত হবে। জাতীয় দলও একসময় যোগ্য স্ট্রাইকার পাবে।’

ব্রাদার্স ইউনিয়নের ম্যানেজার আমের খান এমন প্রস্তাবকে বিবেচনায় আনছেন না,‘বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া কিভাবে লিগ হবে? তাদের সঙ্গে লড়াই করে মাঠে টিকে থাকতে হবে। যদি বিদেশি খেলোয়াড়ই না থাকে,তাহলে সনি নর্দে,কলিনদ্রেস কিংবা বার্কোসের মতো খেলোয়াড়দের খেলা ঢাকার মাঠে কীভাবে দেখবো। আমরা তো আমাদের খেলোয়াড়ি জীবনে বিদেশিদের সঙ্গে লড়াই করে খেলেছি। সুতরাং বিদেশি খেলোয়াড় থাকতেই হবে।’

রহমতগঞ্জ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হামিদ সবুজের ‍যুক্তি,‘বিদেশি খেলোয়াড় বাদ দেওয়া নয়, প্রয়োজনে কমানো উচিত। তাহলে হয়তো দেশিদের খেলার সুযোগ বেশি হবে।’