কাজী নাবিলের বিশ্বাস, ভোটারদের আস্থায় ও ভালোবাসায় আছেন তিনি

কাজী নাবিল আহমেদ, বাফুফের অন্যতম সহ-সভাপতি প্রার্থীবাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের টানা তিনবার সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন কাজী নাবিল আহমেদ। দেশের প্রথিতযশা এই ক্রীড়া সংগঠক চতুর্থবার  বাফুফের নির্বাচনি ময়দানে নেমেছেন। একই পদে। কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন প্যানেলে চার সহ-সভাপতি প্রার্থীর একজন কাজী নাবিল। একটা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আছে তার। ফুটবলের যে দায়িত্বই অর্পিত হোক না কেন, তা সুচারুভাবে করে থাকেন বলে প্রশংসিত সবার কাছে। সামনের দিকে কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখাই তার লক্ষ্য। এই লক্ষ্য নিয়েই ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন এবং আশা করছেন ১৩৯ জন ভোটার তাকে এবারও নিরাশ করবেন না, ভোটারদের আস্থায় ও ভালোবাসায় আছেন তিনি।

নির্বাচনে জিতে ফুটবলের উন্নয়নে নিজের কাজটুকু করে যেতে চান। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত কাজী নাবিল বাফুফে ছাড়াও দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব আবাহনী লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার তত্ত্বাবধানেই আবাহনী দেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে এএফসি কাপের জোনাল সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। আরেকটি বিষয় প্রসঙ্গক্রমে এসেই পড়ে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের ‘দুরবস্থা’ হলেও আবাহনী ব্যতিক্রম। এখন পর্যন্ত পেশাদার ফুটবলে (প্রিমিয়ার লিগ) সবচেয়ে বেশি ছয়বার শিরোপা জিতেছে আবাহনী। ক্রিকেট ও হকিসহ অন্য খেলাতেও আবাহনীর সাফল্য কম নয়।

আগামী শনিবারের নির্বাচনে চারটি সহ-সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছেন আট জন প্রার্থী। কাজী নাবিল অন্যতম। কাউন্সিলর বা ভোটারদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন তিনি। বাংলা ট্রিবিউনকে সেই কথাই শোনালেন, ‘যেকোনও নির্বাচন  উত্তেজনাকর (এক্সসাইটিং)। সবসময় মানুষের কাছে যাওয়া, তাদের সঙ্গে কথা বলা, তাদের কথা শোনা, নিজের স্বপ্নের কথা বলা- এক্সসাইটিংই বলবো আমি। কাউন্সিলর বা ভোটারদের কাছ থেকে সবসময় সাড়া পেয়ে থাকি। এবারও ভালো সাড়া পাচ্ছি। তাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রেখেছি, রেখে চলছি, কথা বলছি।’কাজী নাবিল আহমেদ

টানা চতুর্থবার ভোটাররা তাকে ভোট দেবেন কেন? উত্তরটা কাজী নাবিল খুব ভালো জানেন, ‘কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য আমাকে নির্বাচিত করবেন। আমি যেভাবে কাজ করেছি অর্থাৎ জাতীয় দলকে বর্তমানের এই যে ভালো জায়গায় এনে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছি, সেই কাজটি সামনের দিকেও অব্যাহত রাখার জন্য আশা করবো কাউন্সিলর বা ভোটাররা আমার ওপর এবারও আস্থা রাখবেন।’

এবার চার পদে আট প্রার্থী বলে নির্বাচনটা সবার জন্যই চ্যালেঞ্জিং হওয়ার কথা। কাজী নাবিল এর মধ্যে দেখেন একটা ইতিবাচক দিক, ‘চ্যালেঞ্জ সবসময় প্রতিদিনই বেড়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন সংগঠক আসছেন। সকলেই কাজ করছেন। সকলে ইতিবাচকভাবে কাজ করতে চান। চ্যালেঞ্জ বাড়তির দিকেই থাকে। তবে আশা করছি আমি চ্যালেঞ্জে জিততে পারবো।’

বাফুফেতে আট বছর ধরে জাতীয় টিমস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার সময়ে জাতীয় দল ভালো করছে। এশিয়ান গেমসে প্রথমবারের মতো জামাল ভূঁইয়ারা দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছেন। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও দল খারাপ করেনি। কলকাতায় এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষদিকে গোল করে ড্র করেছে স্বাগতিক ভারত। ঢাকায় কাতারের বিপক্ষে শেষের দিকে দুই গোল হজম করলেও দলের পারফরম্যান্স ছিল আশাজাগানিয়া। তাই এই দল নিয়ে তার রয়েছে নানা পরিকল্পনা, ‘করোনা পরবর্তী সময়ে কীভাবে কার্যক্রম শুরু করা যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে। নতুন আঙ্গিকে কাজ করতে হবে আমাদের। ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে আমাদের জাতীয় দলকে আবারও খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে পারি। এজন্য তাদের পর্যাপ্ত সুবিধা দেওয়া হবে। ভালোভাবে দল গঠন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই। এরইমধ্যে কিছু নতুন খেলোয়াড়ও পেয়েছি। তাদের সঠিক পরিচর্যা করতে হবে।’

বর্তমান সময়ে ফিফা র‌্যাংকিং নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এই র‌্যাংকিং উন্নত করার জন্য কাজী নাবিল আগামী চার বছরের পরিকল্পনাও ঠিক করে ফেলেছেন, ‘আগামী চার বছরের মধ্যে বাংলাদেশের র‌্যাংকিং ১৫০ থেকে ১৬০-এ নিয়ে আসার চেষ্টা থাকবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। গত দুই বছরে আমরা কিছু ফল পেয়েছি। সামনের চার বছরে আরও পাবো।’ এরপরই তিনি যোগ করেন, ‘এখন জাতীয় দল ভালো অবস্থানে আছে। এভাবে ভালো পারফরম্যান্স করতে থাকলে সামনের দিকে আমার সাফের সেমিফাইনাল ও ফাইনালে খেলার লক্ষ্য। তা করতে পারলে র‌্যাংকিং বাড়বে আমাদের। বড় দলের পাশাপাশি সমমানের দলের বিপক্ষেও খেলতে হবে। এতে করে দল আরও ভালো করার সুযোগ পাবে।’

বাংলাদেশে কোচ বিদায় করার সংস্কৃতি পুরনো। তবে এবারই্ ইংলিশ কোচ জেমি ডের অধীনে জামাল-জীবনরা ভালো করছেন। এই কোচকে কাজী নাবিল নিজেই লন্ডনে গিয়ে পছন্দ করে নিয়ে এসেছেন। তার সঙ্গে আরও দু’বছরের চুক্তি হয়েছে। ফুটবলের পরীক্ষিত এই সংগঠকের আশা, ‘জেমি ডের অধীনে দল ভালো করছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। এবার প্রার্থীরা সবাই যোগ্য। আশা করবো ভোটাররা সঠিক জায়গায় ভোট দিতে পারবেন। তাহলে আমি আমার কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে করে যেতে পারবো।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে কাজী নাবিল বলেছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনকে সফল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে তার অভিভাবকত্বে সমস্ত খেলার পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন, সেটি অব্যাহত থাকবে। এবং তার মাধ্যমে বর্তমানে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ফুটবলের পুনর্জাগরণের চেষ্টাটা জোরালো হবে। আবারও সফল হবো আমরা।’