কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে এসে নিজেদের আসল রূপ দেখিয়েছে আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে রীতিমতো ঝড় তুলেছে মারিও লেমসের দল। কলিনদ্রেস-দোরিয়েন্তন-রাফায়েল-জীবনের নৈপুণ্যে শেখ জামাল উড়ে গেছে খড়কুটোর মতো। সোমবার ফেডারেশন কাপে শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে আবাহনী ৬-০ গোলে শেখ জামালকে হারিয়ে উঠে গেছে সেমিফাইনালে।
জোড়া গোল করেছেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার দোরিয়েন্তন ও নাবীব নেওয়াজ জীবন। কলিনদ্রেস ও রাফায়েল অগাস্তো একটি করে লক্ষ্যভেদ করে স্কোরশিটে নাম তুলেছেন।
এমন উদ্ভাসিত ম্যাচের আগে আবাহনীর একাদশে কয়েকটি পরিবর্তন এসেছে। গোলকিপার মাহফুজ হাসান প্রীতম নেই। নিয়মিত গোলকিপার শহিদুল আলম সোহেল এই মৌসুমে প্রথম খেলতে নেমেছেন। চোট কাটিয়ে উইঙ্গার রাকিব হোসেন ফিরেছেন। মিডফিল্ডার ইমন মাহমুদ ও দুই ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা ও সুশান্ত ত্রিপুরাও আছেন।
পূর্ণশক্তির দল নিয়ে শুরু থেকে তেড়েফুঁড়ে খেলতে থাকে আবাহনী। যথারীতি রাফায়েল ছিলেন মধ্যমাঠের সেনানি। কলিনদ্রেসের সঙ্গে তার জুটি জমেছেও। নাম্বার নাইন হিসেবে দোরিয়েন্তন ছিলেন সুযোগসন্ধানী। বদলি নেমে নাবীব নেওয়াজ জীবনও নিজের জাত চিনিয়েছেন। সম্মিলিত মিশেলে শেখ জামাল কোনও পাত্তাই পায়নি। চিনেদু ম্যাথিউ, সলোমান কিং ও ওতাবেকদের নিয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে মাত্র!
প্রথমার্ধে এসেছে দুই গোল। ম্যাচ-ঘড়ির ২২ মিনিটে আবাহনী লিমিটেড প্রথম গোলমুখ উন্মুক্ত করে। কলিনদ্রেসের ফ্রি-কিকে ব্রাজিলিয়ান দোরিয়েন্তন বুটের তলার টোকায় জাল কাঁপান।
১০ মিনিট পর আবাহনীর ব্যবধান দ্বিগুণ হয় পেনাল্টি থেকে। রাকিব হোসেনকে ফেলে দেন শাকিল আহমেদ। রেফারি মিজানুর রহমান বাঁশি দেন। স্পটকিক থেকে জাল কাঁপান রাফায়েল অগাস্তো। গোলকিপার মোহাম্মদ নাইম জায়গা থেকে সেভাবে নড়ারই সুযোগ পাননি।
৪৪ মিনিটে কলিনদ্রেসের ক্রসে রাকিব হোসেন বক্সের ভেতর বল পেয়ে লক্ষ্যে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি। ডিফেন্ডার ইয়াসিন ক্লিয়ার করেন।
বিরতির পরও আবাহনীর আক্রমণে তেজ কমেনি। সমানতালে চলেছে খেলা। ৫৯ মিনিটে রাফায়েলের কর্নারে কলিনদ্রেসের জোরালো হেড গোলকিপার নাইম পাঞ্চ করে প্রতিহত করেন।
তবে ৬২ মিনিটে ঠিকই স্কোরলাইন ৩-০ হয়। কলিনদ্রেসের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে দোরিয়েন্তন বক্সে ঢুকে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আগুয়ান গোলকিপারের বাঁদিক দিয়ে সহজেই বল জড়ান জালে।
৬৮ মিনিটে সুশান্ত ত্রিপুরার ক্রসে ইমন মাহমুদের প্লেসিং ক্রস বারে লেগে প্রতিহত হয়।
দুই মিনিট পর প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া ফ্রি-কিকে কলিনদ্রেস জাল কাঁপালে আবাহনী আবারও এগিয়ে যায়। ততক্ষণে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যায় শেখ জামাল।
৮১ মিনিটে দুই বদলি খেলোয়াড়ের সৌজন্যে গোল আসে। ওভারল্যাপ করে ওঠে ডান দিক দিয়ে মনির আলমের ক্রসে নাবীব নেওয়াজ জীবন আলতো টোকায় গোল করেন।
যোগ করা সময়ে মিলাদ শেখের পাসে জীবন বুক দিয়ে বল নামিয়ে প্লেসিং করে দলকে বড় ব্যবধানে জয়ে সহায়তা করেন।
আগামী ৬ জানুয়ারি সেমিফাইনালে আবাহনী মুখোমুখি হবে সাইফ স্পোর্টিংয়ের। একই দিনে মোহামেডান খেলবে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে।