এর আগে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে উদ্বোধনী টেস্টের পর সর্বপ্রথম নাইমুর রহমান দুর্জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের। এরপর অভিযোগ উঠেছিল মোহাম্মদ রফিকের বিরুদ্ধেও। তবে ২০০৮ সালের নভেম্বরে স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকই প্রথম বাংলাদেশি বোলার ছিলেন, যিনি নিষিদ্ধ হন। যদিও ২০০৯ সালে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বোলিংয়ে ফেরেন। সোহাগ গাজী ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে আরেক বাংলাদেশি বোলার ছিলেন, যিনি বোলিং অ্যাকশনের জন্য নিষিদ্ধ হন। পরবর্তী সময়ে অ্যাকশন পরীক্ষায় উতরালেও বলের সেই আগের ধার ফিরে পাননি। সোহাগ গাজীর পরে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পেসার আল-আমিনের দিকেও সন্দেহের তীর ছোঁড়া হলেও নিষিদ্ধের খাড়ায় পড়তে হয়নি তাকে।
বোলিং অ্যাকশন নিয়ে বিতর্কের শুরু অবশ্য বেশ আগে। ১৯৯৫’র মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা বক্সিং ডে টেস্টে মুত্তিয়া মুরালিধরনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে অভিযোগ আনেন ম্যাচ আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার। এর ঠিক ১০ দিন পর ব্রিসবেনে মুরালির বল ‘নো’ ডাকা হয়। তিন বছরপর আবারও শ্রীলঙ্কা অস্ট্রেলিয়া সফরে গেলে নো ডাকার দরুণ সফর বয়কটের হুমকি দেন তৎকালীন লঙ্কান অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা।
তবে ৯৫ এ অভিযোগ ওঠলেও কখনও নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হয়নি মুরালিকে। প্রকৃতিগতভাবেই তার হাতই একটু বাঁকা বলে পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়।
তবে বোলিং অ্যাকশনের জন্য নিষিদ্ধের খাড়ায় প্রথম পড়েন ‘রাওয়াল পিন্ডি এক্সপ্রেস’ খ্যাত শোয়েব আক্তার। ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে গিয়ে সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের জন্য নিষিদ্ধ হন তিনি। অবশ্য পরবর্তী বোলিং অ্যাকশন শুধরে আবারও খেলায় নেমে পড়েন তিনি।
ক্যারিবিয়ান স্পিনার মারলন স্যামুয়েলস ও ২০০৮ সালে রিপোর্টেড হন। পরে তার কুইকার ডেলিভারি নিষিদ্ধ করে আইসিসি। স্যামুয়েলস মাঝে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে যাওয়ার অনুমতি পান।
শ্রীলঙ্কান স্পিনার সচিত্র সেনানায়েকে ও নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসনকে ২০১৪ সালে নিষিদ্ধ করে আইসিসি। পরে সেনানায়েকে অনুমতি পেলেও উইলিয়ামসনকে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার অনুমতি দেয় সংস্থাটি।
২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ যখন দরজায় কড়া নাড়ছে তখনই যেন বোলারদের বিপক্ষে অভিযানে নেমেছিল আইসিসি। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ওয়ানডে বোলার সাঈদ আজমল। তার কনুই বাঁকানোর মাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছে যাওয়ার অভিযোগে নিষিদ্ধ করা হয় তাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার সুনিল নারিনকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে নিষিদ্ধ করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার অ্যারন ফাঙ্গিসোকে। তিনি ও নারাইন এখনও রি-মডেলেড অ্যাকশন পরীক্ষা দেননি। এছাড়া পাকিস্তানের অল রাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজও বোলিংয়ে নিষিদ্ধ আছেন বর্তমানে। বোলিং করতে না পারলেও ব্যাটিং চালিয়ে যাচ্ছেন এই পাকিস্তান ক্রিকেটার।
এছাড়া তিন মোড়লের মধ্যে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বোলাররাও রয়েছেন এই তালিকায়। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের জন্য অভিযুক্ত হয়েছিলেন অসি পেসার ব্রেট লি, ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিং ও ইংলিশ পেসার জেমস কার্টলি। এদের মধ্যে ব্রেট লি ও হরভজন পরে বোলিংয়ে ফিরতে পারলেও নিষিদ্ধ হয়েছিলেন কার্টলি।
/এমআর/এফআইআর/আপ-এপিএইচ