এত বিশাল জয়ের আনন্দ মনকে সেভাবে নাড়া দিলো না

c54ca63323076388509d326956b31e05-5bde80f06cd24ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সঙ্গে সিরিজ জয়, তাও আবার প্রতিটি টেস্টেই প্রতিপক্ষ তিন দিনেই ধরাশায়ী। শেষ টেস্টে যখন ক্যারিবিয়ানরা সিরিজে সমতা আনতে মরিয়া, তখন কিনা খেলার মাঝপথেই নকআউট। আমাদের স্পিনারদের ডান ও বাঁ হাতের পাঞ্চেই তারা একে একে ধরাশায়ী হলো দুই ইনিংসেই।

ঢাকার পিচ চট্টগ্রামের পিচ থেকে অনেক ভালো ব্যবহার করেছে। হাতে গোনা কয়েকটি বল বাজেভাবে নিচু হয়েছে এবং বাড়তি বাউন্সও ছিল কিছু বলে। এই টেস্টের প্রায় ১৫০০টি বলের মধ্যে ২৫ বা ৩০টি বলে যদি অসমান বাউন্স হয়েও থাকে তা মোটেই ভ্রু কুঁচকানোর মতো বিষয় নয়। তবে শাই হোপের আউট হওয়া দুটি বলই নিচু হয়েছিল এবং প্রথম ইনিংসের বলটি অতিমাত্রায় নিচু হয়েছিল বিধায় তা ছিল খেলার অনুপযুক্ত।

ভারতে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা বা চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টের ভুল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের কোনও শিক্ষা না নেওয়া তাদের ব্যাটিং সামর্থ্যের রুগ্ন চিত্রের বহিঃপ্রকাশ হলো ঢাকা টেস্টে। ঢাকার যথেষ্ট স্পোর্টিং উইকেটে তাদের টেম্পারমেন্ট, টেকনিক ও প্রতিপক্ষের নেওয়া বোলিং আক্রমণের কৌশলের বিপক্ষে তারা কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারল না। সামান্য মন্থর পিচে মানিয়ে ব্যাট করার মতো কুশলী ব্যাটসম্যানের বড়ই অভাব এই দলে। শুধু শিমরন হেটমায়ারের ব্যাটিং আমাদের বোলার ও দর্শকদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে একসময় এই দলে তার চেয়েও উঁচু মানের ব্যাটসম্যানরা ২২ গজে ব্যাট হাতে শাসন করেছে। দল হিসাবে অনেক বড় লজ্জা নিয়ে তারা এই সিরিজ শেষ করলেও হেটমায়ার ব্যাট হাতে এককভাবে সকলের মন জয় করেছেন।

এই সিরিজের দুটি টেস্ট জয় বাংলাদেশকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে এই ফরম্যাটে। বিশেষ করে ইনিংস ও ১৮৪ রানের জয় অনেক সম্মানজনক। দলের ব্যাটসম্যান ও বোলাররা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব চমৎকারভাবে পালন করেছেন। ৩৭ ওভারের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংস গুঁড়িয়ে ম্যাচের সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা স্পিনাররাই দিয়েছেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০০ ওভারও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই পিচে খেলতে পারেনি। দুই ইনিংসে বোলিং বণ্টনের আলোকে ৪ জন স্পিনার ভবিষ্যতে সংযোজনের আগে অনেক কিছুই ভাবার ও বিশ্লেষণের রসদ এই টেস্টেই পাওয়া যাবে। ভালো জায়গায় বল করতে পারলে দলে তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনারই যথেষ্ট। প্রথম ইনিংসে তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান দুজনে মিলে মাত্র ৪ ওভার বল করার সুযোগ পেয়েছেন।

মেহেদী হাসান মিরাজ ঘরের মাটিতে আরেকটি সিরিজকে তার নৈপুণ্য দিয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন এবং তার সঙ্গে নবাগত নাঈম মিলে প্রমাণ করলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষেও অফ স্পিনাররা অধিক সফল হতে পারেন। তাদেরকে ক্রিকেট সূত্রে ফেলে কম ব্যবহার করা উচিত নয়।

শেষ টেস্টের জয় দ্বিতীয় দিনের শেষেই তার সুগন্ধ ছড়াচ্ছিল বিধায় এত বড় বিজয় আমাদের খেলোয়াড় তথা অনুরাগীদের মনে আনন্দের ঝড় বয়ে দেয়নি। অনেক অভিনন্দন দলনায়ক ও তার দলকে। এই ব্যস্ত সূচির মাঝে বাড়তি দুই দিনের বিশ্রাম পরের সিরিজের আগে বেশ কাজে দেবে।