পুলিশ পেটাল ‘ঢাকার সমর্থকরা’

অনাকাঙ্খিত সেই মুহূর্তটিঘটনাস্থলের একটি ভিডিওতে দেখা যায় ড্রামের স্টিক দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে ঢাকা ডায়নামাইটসের জার্সি পরা সমর্থকরা। ‘ঢাকার সমর্থকরা’ জানিয়েছে, পুলিশের কয়েক সদস্য ভিআইপি গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের প্রথম সারিতে বসে ছিলেন, তাদের উঠতে বললে উল্টো পিছনে বসতে বলে। এতেই হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। যদিও পুলিশ বলছে অন্য কথা।

মঙ্গলবার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ঘটে গেল এক লঙ্কাকাণ্ড। এদিন এলিমিনেটর ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংস ও রাজশাহী কিংসের মধ্যকার ম্যাচটি শেষ হওয়ার পর ঘটে এই ঘটনা। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয় ঢাকার সমর্থকরা; সমর্থকদের মাঝে বিসিবির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজনকেও দেখা যায়।

ঘটনার পর কর্তব্যরত পুলিশের বক্তব্য ছিল এমন, ‘খেলা শেষ হওয়া মাত্র ঢাকা ডায়নামাইটসের ক্রিকেটাররা ১ নম্বরের ড্রেসিংরুমে একে একে ঢুকতে থাকে। সে সময়ে ঢাকার সমর্থকরা ড্রেসিংরুমের কোল ঘেঁষে থাকা ভিআইপি গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের সামনে এসে ক্রিকেটারদের সঙ্গে সেলফি তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে সমর্থকদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ দুই-একজনকে ধরার চেষ্টা করলে ঢাকার সমর্থকরা পুলিশের উপর চড়াও হয়।’

ঘটনাস্থলের একটি ভিডিওতে দেখা যায় ড্রামের স্টিক দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে ঢাকা ডায়নামাইটসের জার্সি পরা সমর্থকরা। এমনকি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পরা বিসিবির লজিস্টিক বিভাগের মুন্না মিরাজকেও সে সময়ে আঙুল তুলে এক পুলিশ সদস্যকে শাসাতে দেখা যায়।

dhaka-1ঢাকা ডায়নামাইটসের সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের কয়েক সদস্য ভিআইপি গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের প্রথম সারিতে বসে ছিলেন। তাদের উঠতে বললে উল্টো পিছনে বসতে বলে। এতেই হাতাহাতির সৃষ্টি হয়।

মিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, ‘গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসা নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, মাঠে এমন ঘটনা কোনও সময় ঘটেনি। তবে শুধু বসা নিয়ে এটা হয়নি। ঢাকার ক্রিকেটাররা ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় অনেকে ছবি তুলতে এগিয়ে যায়। তাদের আটকাকে আমরা এগিয়ে গেলে আমাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। আমরা প্রথম সারিটা নিরাপত্তার জন্য কাউকে বসতে দেই না। ওখানে একটা বাউন্ডারি দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু ওরা ওই বাউন্ডারি টপকে গিয়েছিল।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ সদস্য বলেছেন,  ‘আমাদের একজন পুলিশ, সাব ইন্সপেক্টর জহিরকে মারধর করেছে ঢাকার সমর্থকরা। আমি একজন পুলিশ সদস্য হয়ে বিব্রতবোধ করছি। ওই গ্যালারিতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের লাঞ্ছিত করেছে। বাবা-মা তুলে গালাগাল দিয়েছে। সেখানে ঢাকা ডায়নামাইটসের কর্মকর্তা ও বিসিবির শীর্ষ কর্মকর্তারাও ছিলেন। আমরা এর বিচার চাই।’

তিনি আরও যোগ করেন ‘পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় কোনও মতেই কেউ তার গায়ে হাত তুলতে পারে না। এতে পোশাকের অবমাননা করা হয়। ভিডিওতে যাদের দেখা গেছে, খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব। এই ব্যাপারে পুলিশের বড় কর্মকর্তারা অবগত আছেন।’

এদিকে বিসিবির পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেছেন, ‘এত দ্রুত এর নিষ্পত্তি হওয়া সম্ভব নয়। আমরা দুই পক্ষই বিষয়টি নিয়ে বসেছি। তদন্ত করার পর আসলে কী ঘটেছিল, জানানো সম্ভব হবে।’

/আরআই/কেআর/