রুট কীর্তির পর ধুঁকছে পাকিস্তান

প্রথম টেস্ট হেরে যেন তেতে ছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। লর্ডসে যার কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছিল সেই ইয়াসির শাহকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পাত্তাই দিল না ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। অ্যালিস্টার কুকের সেঞ্চুরির পর জো রুট তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। এতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়লো ইংল্যান্ড। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫৮৯ রান করে ইনিংসের ডিক্লেয়ার করে ইংলিশরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫৭ র‌‌‌ানে চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পাকিস্তান।

247991.3

জো রুট ২৫৪ রান করে ওয়াহাব রিয়াজের বলে আউট হন। আর জনি বেয়ারস্টো আউট হন ৫৮ রান করে। ইংল্যান্ডের এই রানের পাহাড় গড়তে একাধিক রেকর্ড গড়লেন জো রুট। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে কোনও ইংলিশ ব্যাটসম্যানের সর্বশেষ ডাবল সেঞ্চুরি ছিল ৬২ বছর আগে। ১৯৫৪ সালে ট্রেন্ট ব্রিজে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন ডেনিস কম্পটন। ৬ যুগ পর তাকে স্পর্শ করলেন জো রুট। আরেকটি রেকর্ডের সামনে ছিলেন ইংল্যান্ডের এ ব্যাটসম্যান। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইংল্যান্ডের কোনও ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ২৫৬। ১৯৬৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যারিংটন তিনি এই রান করেন। কিন্তু ৫২ বছরের এই রেকর্ড একটুর জন্য ছুঁতে পারলেন না জো রুট। তবে তিনি এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ফেলেন। এর আগে টেস্টে তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ২০০*। ২০১৪ সালের জুনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লর্ডসে তিনি ওই ইনিংস খেলেন। রুটের এটি ক্যারিয়ারে দশম টেস্ট সেঞ্চুরি। এই নিয়ে পাঁচবার তিনি ১৫০-এর ওপরের ইনিংস খেললেন। আগের চারবারের তিনবারই তিনি ছিলেন অপরাজিত। তার মধ্যে একবার করেন দ্বিশতক। কাল ৪০৬ বলের ইনিংসে রুট ২৭টি চার মারেন।

৪ উইকেটে ৩১৪ রান নিয়ে গতকাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড। জো রুট ১৪১ ও ক্রিস ওকস অপরাজিত ছিলেন ২ রানে। এদিন ওকস ৫৮ রানে ফেরার পর দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন রুট। পঞ্চম উইকেটে তারা যোগ করেন ১০৩ রান। দিনের শুরু থেকে পাকিস্তানের বোলারদের শাসন করেন তারা। বিশেষ করে আগের ম্যাচে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক ইয়াসির শাহকে তারা নির্বিষ করে ফেলেন। ইয়াসির শাহ ২১৩ রান দিয়ে ওকসের উইকেটটি তুলে নেন। ওকসও ৫৮ রান করেন।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইয়াসির এখন একটি লজ্জাকর রেকর্ডের অধিকারী। এর আগে এই মাঠে কোনও টেস্টের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৮৯ রান হজম করার ঘটনা ছিল ১৯৩৪ সালে। সেবার অ্যাশেজে বিল ও’রিলি হজম করেন এই রান। কিন্তু ৮২ বছর পর সেই লজ্জা ইয়াসিরের কাঁধে গিয়ে পড়লো।

পাকিস্তানের পক্ষে এ ইনিংসে ১০৬ রানে ৩ উইকেট নেন ওয়াহাব রিয়াজ। ১০১ রানে রাহাত আর ৮৯ রানে আমির ২টি করে উইকেট নেন।

বোলারদের ব্যর্থতার ধাক্কা সামলাতে পারেনি পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরাও। উদ্বোধনী জুটিতে ঘণ্টাখানেক টিকে ছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ ও শান মাসুদ। এরপর মাসুদ টিকে গেছেন, কিন্তু আরেক পাশে ছিল ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া। নাইটওয়াচম্যান রাহাত আলির আউটের আগে দুই নির্ভারযোগ্য ব্যাটসম্যান আজহার আলি ও ইউনুস খান আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটু শটে। শেষ পর্যন্ত ৫৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে পাকিস্তান। ব্যাট করছেন মিসবাহ-উল-হক ও শান মাসুদ।

/এমআর/