পুলিশ হেফাজতে মাশরাফি ‘ভক্ত’





মেহেদীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ

মাশরাফি বিন মুর্তজাকে জড়িয়ে ধরা সেই ‘ভক্ত’ মেহেদী হাসানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মিরপুর মডেল থানায় নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই ভক্ত ইউনাইডেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।
শনিবার রাতে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান তৃতীয় একদিনের ম্যাচ চলাকালীন ওই ভক্ত দৌড়ে সরাসরি মাঠে ঢুকে মাশরাফিকে জড়িয়ে ধরেন। এরপর মাঠে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে মাঠ থেকে বের করে নিয়ে যান। খেলা শেষে পুলিশ তাকেসহ আরও তিন যুবককে মিরপুর মডেল থানায় নিয়ে যায়।

অপর তিনজন হলেন তানভীর আহমেদ মারুফ, আয়মান আসিফ রাফি ও আবীর হোসেন। তারা মেহেদীর বন্ধু এবং সবার বাড়ি সাভারে।  আটক মারুফ ও রাফি এসএইচসি পাসের পর বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। আর আবীর হোসেন ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র।মেহেদীর বাবা জয়নাল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তার ছেলে মেহেদীসহ আটক চারজন যুবক একত্রে খেলা দেখতে এসেছিলেন। 


মিরপুর মডেল থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অজিৎ রায় বাংলা ট্রিবিউনকে মেহেদী সম্পর্কে বলেন, ‘ছেলেটিকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে ওসির কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেখানে আরও সিনিয়র অফিসাররাও আছেন।’

’ভক্ত’কে খেলার মাঠেই জড়িয়ে ধরেন মাশরাফিমিরপুর জোনের ডিসি জসীম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, সে মাশরাফির ভক্ত। তবে সামনে যেহেতু ইংল্যান্ড ক্রিক্রেট দল ঢাকায় আসবে তাই তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা।

পপপটিভির পর্দায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের বোলিংয়ের ২৯তম ওভারের সময়ের ঘটনা। আফগানিস্তানের তখন সাত উইকেট নাই। রান মাত্র ১০২। হঠাৎ কোনও একজনের মাঠে ঢুকে পড়া চোখে পড়ে মাশরাফির। তিনি নিজেও প্রথমে ভড়কে গিয়েছিলেন। ওই তরুণ যখন হাত বাড়িয়ে দেয়, মাশরাফিও হাত বাড়ালেন। এরপর মুহূর্তেই তাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। ততক্ষণে হাফ ডজন নিরাপত্তাকর্মী ও মাঠের স্টাফরা ঘিরে ফেলেন ওই তরুণ ভক্তকে। দুজনে মিলে মাশরাফির বুক থেকে ওই তরুণকে টেনে বের করার আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। কিন্তু কিছুতেই ছাড়ছেন না। নিরাপত্তাকর্মীদের অ্যাকশন দেখে মাশরাফি হয়তো আঁচ করতে পারলেন ওই তরুণের অবস্থা পরবর্তী সময়ে কী হতে পারে। তাই তিনি একটু পরিবেশটা হালকা করার চেষ্টা করলেন। তরুণটিকে নিজেই মাঠের বাইরে দিয়ে আসতে শুরু করলেন। যখন নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে ছেড়ে দিলেন, তখনও সংশয় রয়ে গেল বাংলাদেশ অধিনায়কের মনে। সে কারণেই কিনা মাশরাফির অনুরোধে ওই ভক্তকে বসিয়ে রাখা হয় গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে।
তবে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর ওই তরুণকে কড়া নজরদারিতে রেখেছিল পুলিশ। খেলা শেষে তাকে সোজা মিরপুর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। হঠাৎ মাঠে দৌড়ে প্রবেশের কারণ জানার চেষ্টা করছি।’

ছবি: সংগৃহীত
/এআরআর/এমও/এমএনএইচ/ এপিএইচ/