‘কাজটা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়’

মাশরাফি মর্তুজানিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মানসিকতার পরিবর্তনটাই ফলাফল এনে দিতে পারে বলে মনে করেন মাশরাফি। সিরিজ শুরু হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ার ক্যাম্পকে ইতিবাচক দেখছেন বাংলাদেশের সীমিত ওভারের অধিনায়ক।

গত দেড় বছর ধরে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে। ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বড় বড় দলকে হারিয়েছে। এমনকি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে টাইটগাররা। এই ধারা অব্যাহত রাখা কতটা কঠিন, এমন প্রশ্নের জবাবে রঙিন পোষাকের অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা বলেছেন, ‘এটা আসলে বলা খুব কঠিন। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের হারানো অনেক কঠিন। অনেক বড় বড় দলও পারে না। তবে আমরা বলছি না আমরাও পারব না। ভালো খেলতে পারলে সেটা সম্ভব। কিন্তু কাজটা অনেক কঠিন, তবে অসম্ভব নয়।’

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলেছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে মাশরাফিরা। ভারতের বিপক্ষে বিতর্কিত আম্পায়ারিং না হলে বাংলাদেশ হয়তো সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করত।

বাংলাদেশের সাফল্যধারা শুরু ওখান থেকেই। এখন অবধি ওয়ানডে ক্রিকেটে তার ব্যত্যয় ঘটেনি। হয়তো দুই একটি ম্যাচ হেরেছে। তাতেও সাফল্য কম অংশেই কমেনি মনে করেন মাশরাফি, ‘সত্যিকার অর্থে আমরা শেষ বছর বেশিরভাগ ম্যাচই দেশে খেলেছি। বেশিরভাগ ম্যাচও আমরা জিতেছি। আমরা গত দেড় বছর আগে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, তার ৮০ ভাগ পূর্ণ করতে পেরেছি। এখন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে। ঘরের মাঠের সাফল্য টেনে নিতে হবে ভিন্ন দেশে এবং ভিন্ন কন্ডিশনে। এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। অনেক প্রতিষ্ঠিত দলের জন্যও এটা চ্যালেঞ্জিং। সেক্ষেত্রে আমাদের জন্য আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়া অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে ভিন্ন। মনে করি একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে। আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেভাবে খেলেছি, সেই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে অবশ্যই ভালো ফলাফল সম্ভব।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মানসিকতার পরিবর্তনটাই ফলাফল এনে দিতে পারে বলে মনে করেন মাশরাফি, ‘আমাদের মানসিকতার এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেমন ছিল এখন আমাদের তেমন নেই। এখন আমরা প্রতিটি ম্যাচ জয়ের চিন্তা করেই মাঠে নামি। দুই বছর আগেও লক্ষ্য ছিল ভালো খেলার। সেখানে থেকে ক্রিকেটারদের মানসিকতা পরিবর্তন হয়েছে। সবাই জানে নিউজিল্যান্ড সিরিজ অনেক কঠিন। আমরা যদি আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি, তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু হবে।’

নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ শুরু হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ার ক্যাম্পকে ইতিবাচক দেখছেন মাশরাফি, ‘অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন হয়তো ভিন্ন। তারপরও আমি বিশ্বাস করি এই ক্যাম্প আমাদের সিরিজ শুরু হওয়ার আগে অনেক সাহায্য করবে।’

ঘরের বাইরে কন্ডিশন ভিন্ন থাকে বলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়িত্ব নিতে হবে মনে করেন ওয়ানডে  ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক, ‘সবসময়ই সিনিয়র খেলোয়াড়দের দায়িত্ব থাকে। সেই সঙ্গে জুনিয়ররা সাহায্য করতে পারে সিনিয়রদের।’

নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ওয়ানডে ম্যাচে ৩০০’র উপরে রান হবে বিশ্বাস করেন মাশরাফি। এক্ষেত্রে শুধু টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নয়, বোলারদেরও আছে। ব্যাটসম্যানদের চেষ্টা করতে হবে বোলারদের উপর যেন চাপ না পড়ে। আবার বোলারদের চেষ্টা করতে হবে ব্যাটসম্যানদের উপর যেন চাপ না পড়ে, ‘আমি মনে করি, চ্যালেঞ্জটা সব জায়গাতেই কঠিন। ওইখানে আমাদের  ৩০০ থেকে ৩৫০ স্কোর থাকবে এবং করতে হবে। বোলিং-ব্যাটিং দুইপক্ষকেই ভাবতে হবে; এমন কিছু করতে হবে যাতে কারও কোনও কষ্ট না হয়। চ্যালেঞ্জটা আসলে সবজায়গায় থাকে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিউজিল্যান্ডের বাতাসে মানিয়ে নেওয়া। একটা ম্যাচটা জিততে গেলে আমরা দেশে যতটুকু চেষ্টা করি, তার চেয়ে বেশি চেষ্টা করে জিততে হবে ওখানে।’

২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। এরই মধ্যে বাংলাদেশ দল দেশ ছেড়েছে। প্রথমে তারা অস্ট্রেলিয়ায় ১০ দিনের ক্যাম্প করবে। ক্যাম্প শেষে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে বিমানে চাপবে ২৩ সদস্যের বাংলাদেশ দল। এই সফরে বাংলাদেশ তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি এবং দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে।

/আরআই/এফএইচএম/