৩৫ বলে চার ছক্কা ও সমান সংখ্যক চারে মাশরাফি তার ৫৮ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। লং অন, মিড উইকেটের উপর দিয়ে বিশাল দুটি ছক্কা ছিল দেখার মতো। এবারই প্রথম নয়, আর আগেও অনেকবার মাশরাফির এমন ইনিংসের দেখা মিলেছে। তবে ব্যাট হাতে এবারের দৃশ্যটা দেখা গেল দীর্ঘ বিরতি শেষে।
মাশরাফির ভক্ত বাংলাদেশ ছাড়িয়ে এখন ক্রিকেট বিশ্বের সব জায়গায়। কলম্বো ক্রিকেট ক্লাবে উপস্থিত সব শ্রীলঙ্কান সমর্থকও হয়ে উঠলেন মাশরাফির সমর্থক। মাশরাফির একেকটি ছক্কা যখন গ্যালারিতে আছড়ে পড়ে, সমর্থকরা ‘মাশরাফি মাশরাফি’ বলে চিৎকার দিয়ে ওঠেন।
বুধবার এমন ইনিংসে খেলে মাশরাফি সন্তুষ্ট। তবে মনের কোণে একটুখানি আক্ষেপও যেন লুকিয়ে ছিল। ম্যাচ শেষে হোটেলে ফেরার পথে গাড়িতে উঠতে উঠতে ‘বাংলা ট্রিবিউন’কে শুনিয়েছেন সেই আক্ষেপের কথা। কোন ছক্কাটা সবচেয়ে ভালো ছিল? একটুখানি আক্ষেপ মেশানো সুরে বললেন, ‘সবগুলোই ভালো ছিল। ভালো ছিল ঠিক আছে, কিন্তু দলকে তো জেতাতে পারলাম না।’
৯.৪ ওভারে মাশরাফি-মাহমুদউল্লাহ মিলে অষ্টম উইকেটে ১০১ রানের জুটি গড়েন। তাতেই জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয় বাংলাদেশের। আউট হওয়া আগে স্ট্রাইকে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন মাশরাফি। থিসারা পেরেরার স্লোয়ারে আউট হওয়ার আগের ওভারেই দারুণ এক শটে বাউন্ডারি পেয়েছিলেন তিনি। আত্মবিশ্বাসী মাশরাফি শেষ পর্যন্ত স্লোয়ারের কাছে পরাজিত হয়ে ক্রিজ ছেড়েছেন। আউটের আক্ষেপ করতে করতে বললেন, ‘ওই সময়ে আসলে রিয়াদকে স্ট্রাইক দেওয়া দরকার ছিল। ওরা স্লোয়ার দিচ্ছিল, ও (রিয়াদ) তো ব্যাটসম্যান, আমার চেয়ে অনেক ভালো মারতে পারতো।’
প্রস্তুতি ম্যাচটিতে জয় খুব প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন মাশরাফি। কেননা এর আগে অনেকবার বাংলাদেশ জয়ের খুব কাছে গিয়ে ম্যাচ হেরেছে। ২০১২ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ২ রানে পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল। ভারতের বিপক্ষে গত বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতেও ১ রানে হারের আক্ষেপ আছে বাংলাদেশের। মাশরাফি আগের সব হারের ব্যর্থতা ভুলতে চেয়েছিলেন এই ম্যাচ দিয়ে, ‘সাড়ে তিন শ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে পারলে খুব ভালো হতো। আমরা কাছে গিয়ে এমন কত ম্যাচ হেরেছি...। এই ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসার জন্য জয়টা খুব দরকার ছিল।’
বুধবার প্রস্তুতি ম্যাচে দুই তারকা ব্যাটসম্যান সাকিব-তামিম ছিলেন না। তাদের দুজনকে ছাড়াই বাংলাদেশ ৩৫২ রান করেছে। মাশরাফি এখানেই ইতিবাচক দিক খুঁজে নিতে চাইছেন, ‘আমরা আমাদের মূল ব্যাটসম্যানদের ছাড়াই আজকে প্রায় জিতে যাচ্ছিলাম। সাকিব-তামিম থাকলে ম্যাচের রেজাল্ট হয়তো চলে আসতো। কিংবা আরও দ্রুতই লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারতাম।’
/আরআই/কেআর/