আরও ভালো করার সুযোগ ছিল: লিটন

লিটন দাসডারউইনে পাঁচটি ওয়ানডে ও একটি তিনদিনের ম্যাচ খেলে সোমবার রাতে দেশে ফিরেছে বিসিবির হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দল। অস্ট্রেলিয়ায় সফরের সবগুলো ম্যাচেই জয় পেয়েছে লিটন-এনামুলরা। আর তাতে শিষ্যদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এইচপি দলের কোচ সাইমন হ্যালমট। বিশেষ করে লিটন দাসকে ‘দারুণ’ খেলোয়াড় হিসেবে তকমাও দিয়েছেন এই কোচ। যদিও এসব প্রশংসায় গা ভাসিয়ে দিতে চান না লিটন। আরও ভালো করার প্রত্যয় ছিল তার মাঝে। সেটা করতে না পেরে কিছুটা হতাশ তরুণ এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে এইচপি দলের অধিনায়ক লিটন এভাবেই নিজের পারফরম্যান্সের বিশ্লেষণ করলেন, ‘আমার ব্যাটিংয়ে আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। কিন্তু পারিনি। ফর্ম সব সময় থাকে না। আর কন্ডিশন আমাদের অনুকূলে ছিল না। প্রথম দিন যাওয়ার পরই আমাদের একটা অন্যরকম অনুভূতি এসেছে। কারণ এখানকার আবহাওয়া, আর ওখানকার আবহাওয়া একটু ভিন্ন। প্রথম ম্যাচটি আমরা অনেক কষ্ট করে জিতেছি। তবে বেশ কিছু পরিকল্পনায় আমরা সফল হতে পারিনি।’

নিজের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দলীয় ব্যাটিংটাও ভালো ছিল না দলের। আর তাতে হতাশা ঝরেছে লিটনের কণ্ঠে, ‘দলীয়ভাবে আমরা আরও একটু ভালো খেলতে পারতাম। আমরা তিনশ’র বেশি কিন্তু একটি ম্যাচেই করেছি। আর এটাও ঠিক যে সুযোগও বেশি পাইনি। পরে ব্যাটিং করেছি দুই-তিনটি ম্যাচে। যদি সুযোগ হত এবং আরও কয়েকটা সেঞ্চুরি হত, তাহলে আরও ভালো লাগতো।’

ডারউইনে শেখার উদ্দেশ্যে উড়াল দেওয়া এইচপি দলের এই সফরটা ভালো হয়েছে বলে মনে করেন লিটন, ‘আমি এখান থেকে গিয়েছিলাম কিছু শেখার জন্য। আবহাওয়া কেমন, উইকেটটা কেমন, উইকেট নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ করা যায় নাকি- এগুলোতেই আমার মূল লক্ষ্য ছিল। সবারই কম-বেশি এটা লক্ষ্য ছিল।’

বিশেষ কী শিখলেন এমন প্রশ্নে লিটনের উত্তর, ‘অনেক কিছুই শিখেছি। ওই উইকেট থেকে আমাদের উইকেট অনেক ভিন্ন। আমাদের এখানে অনেক বেশি ঘাম ঝরে। দশ মিনিট খেললেও প্রচুর পরিমাণে শরীর ঘামে। কিন্তু ওখানে ওটা হয় না। আবার ওখানে প্রচুর পরিমাণে বাতাস থাকে। এটা অনেক সময় পক্ষে থাকে আবার বিপক্ষেও চলে যায়। এসব বিষয়েই খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

নর্দার্ন টেরিটরি দলটির বিপক্ষে সবগুলো ম্যাচই জিতেছে বাংলদেশ। দলটি পুরো শক্তির দল না হলেও অত খারাপ নয় বলে জানালেন লিটন, ‘দলটা ভালো ছিল। হয়ত ওদের চুক্তিভুক্ত খেলোয়াড়রা ছিল না। এদের ভিতরে যারা নর্দার্ন টেরিটরির ভালো খেলোয়াড় তারা খেলেছে আমাদের বিপক্ষে। আমাদের মান কিন্তু অনেক উঁচুতে ছিল। আমাদের প্রায় সবাই বড় বড় পর্যায়ে অনেক দিন ধরে খেলছি। ওখানে হয়ত ওমন পর্যায়ে কেউ ছিল না।’

সফরে অধিনায়কের দায়িত্বটা বেশ উপভোগ করেছেন লিটন। তার মতে, ‘খুব ভালো একটি অভিজ্ঞতা ছিল। খেলোয়াড় হিসেবে সব সময় খেলি। এবার একটা অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিল- নেতৃত্ব দেওয়া। এ বিষয়টাতে পছন্দেরও একটা ব্যাপার থাকে। আমার কাছে অধিনায়কত্ব মজার একটি বিষয়। আমি এবার এটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করেছি।’

নতুন কন্ডিশনে খেলতে গিয়ে মানসিকতার উন্নতি করাটাই সবচেয়ে জরুরি। আর এই বিষয়টাকেই গুরুত্ব দেন লিটন, ‘আসলে এখানে মানসিকতা সবথেকে বড় জিনিস। আমরা প্রিমিয়ার লিগে বিকেএসপির মাঠে খেলেছি। আমাদের মাঠগুলো ছোট ছোট। ওখানে অনেকগুলো বড় মাঠ। তখন একটা সংশয় তৈরি হয় যে আমি এই শটটা মারবো কি, মারবো না। এছাড়া বাতাসও পরিবর্তন হয় ঘনঘন। এগুলো ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারদের সমস্যা তৈরি করে। এ জিনিসগুলো খাপ খাওয়ানোর বিষয় থাকে। মূলত বাইরের কন্ডিশনে এগুলো খাপ খাওয়ানোটাই জরুরি।’

ডারউইনের সফরটা লিটনকে ব্যক্তিগত ভাবে কাজে দেবে বলে জানান তিনি, ‘আসলে ওখানকার অভিজ্ঞতা অনেক কাজে আসবে। বিশেষ করে আমার জন্য। পরবর্তীতে খেলতে গেলে বোঝা যাবে এ জায়গাটাতে খেলতে গেলে কীভাবে খেলা দারকার।’

তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘জাতীয় দল নিয়ে আমার মাথায় এখন কোনও চিন্তা নেই। আমি গিয়েছিলাম এইচপির হয়ে। যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম, তাতে সফল হয়েছি।’

/আরআই/এফআইআর/