আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবেই সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। ভারতকে প্রায় একাই গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর ক্রিকেট-দুনিয়ায় তার নাম হয়ে যায় ‘কাটার-মাস্টার’। আইপিএলে সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছেন, সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে উপহার দিয়েছেন প্রথম শিরোপা। সেই ‘কাটার মাস্টার’-এর কাটার ইদানীং নিশানা খুঁজে পাচ্ছিল না। ইনজুরি আর ফিটনেস সমস্যায় নিজেকে যেন খুঁজে ফিরছিলেন ‘দ্য ফিজ’।
অবশেষে নতুন বছরের শুরুতে পুরোনো ছন্দে দেখা গেলো মোস্তাফিজকে। কাটার-স্লোয়ারে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে তিনি তুলে নিয়েছেন দুই উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা, ১০ ওভার বোলিং করে একটি মেডেন সহ তার খরচ মাত্র ২৯ রান, আর ‘ডট’ বল ৪১টি!
এমন পারফরম্যান্সের পর আবার মোস্তাফিজকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের ঢেউ। ক্রেমার তো রীতিমতো মুগ্ধ, ‘আজ মোস্তাফিজ দারুণ বোলিং করেছে, আমাদের ব্যাটসম্যানদের ভীষণ ভুগিয়েছে। তার বলে রান নিতে না পেরে চাপে পড়ে যায় ব্যাটসম্যানরা।’ এখানেই না থেমে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক প্রশংসায় ভাসিয়ে দিলেন ‘কাটার মাস্টার’কে, ‘মোস্তাফিজের স্লোয়ার খেলা খুব কঠিন। আসলে তার বল কিছুটা সময় নিয়ে খেলতে হয়। আমরা জানি, ইনজুরি থেকে সেরে উঠে সে ছন্দ ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে। মোস্তাফিজ সত্যি একজন বিশ্বমানের বোলার।’
শুধু জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক নন, সংবাদ সম্মেলনে সাকিবও মেতে উঠলেন মোস্তাফিজ-বন্দনায়, ‘আমার কখনোই মনে হয়নি যে মোস্তাফিজ খারাপ বোলিং করেছে। হয়তো উইকেট পায়নি, কিন্তু একজন বোলারের পক্ষে সব সময় উইকেট পাওয়া সম্ভব নয়। ছন্দে ফিরতে মোস্তাফিজ অনেক পরিশ্রম করেছে। তার বোলিং দেখে আমি সন্তুষ্ট।’
মোস্তাফিজ সন্তুষ্ট করলেও জিম্বাবুয়ে ‘সন্তুষ্ট’ করতে পারেনি সাকিবকে। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আরেকটু লড়াকু পারফরম্যান্স আশা করেছিলেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়, ‘আমরা ধারণা করেছিলাম, জিম্বাবুয়ে আরও ভালো ব্যাটিং করবে। কিন্তু তারা সেটা করতে পারেনি।’
ম্যাচের প্রথম ওভারেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে বিপদে ফেলার কৃতিত্ব তারই। পরে আরেকটি উইকেট নেওয়া সাকিব দারুণ বোলিং করেছেন পুরো ম্যাচে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার অবশ্য জিম্বাবুয়েকে ১৭০ রানে গুঁড়িয়ে দিতে সবার অবদানের কথাই বললেন, ‘আমাদের বোলারদের কৃতিত্ব দিতে হবে। মাশরাফি ভাই, মোস্তাফিজ, রুবেল সবাই খুব ভালো বোলিং করেছে। রুবেলকে সব সময় কঠিন পরিস্থিতিতে বল করতে হয়। অন্য দিনের মতো আজও সে সফল।’
বছরের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়ে সাকিব স্বাভাবিকভাবেই খুশি। তবে এখনই আত্মপ্রসাদে না ভুগে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের ওপর জোর দিচ্ছেন তিনি, ‘নতুন বছরের শুরুটা ভালো করা দরকার ছিল। সেদিক থেকে এই জয় অবশ্যই দারুণ ব্যাপার। তবে তিন দেশের টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। আজকের জয় অবশ্য আমাদের মানসিকভাবে উজ্জীবিত করবে।’