ফাইনালে আবারও ব্যর্থ বাংলাদেশ

কার্তিক ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেনশেষ ওভারের নাটকীয়তায় বাংলাদেশকে হারালো ভারত। আরেকবার ফাইনালে হারের বেদনায় নীল সাকিব-মুশফিকরা। শেষ বলে ছক্কা মেরে দলকে জেতালেন দিনেশ কার্তিক। ৪ উইকেটে জিতে নিদাহাস ট্রফি জিতলো ভারত। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৮ রান করে চ্যাম্পিয়ন হলো তারা।

রোহিত শর্মার ব্যাটে ঝড়ো সূচনা করেছিল ভারত। বাংলাদেশ জোড়া আঘাত করলেও তার পারফরম্যান্সে অস্বস্তি কাটছিল না। ম্যাচ ছিল ভারতের দিকেই। ১৪তম ওভারে শেষ পর্যন্ত ৫৬ রানে তাকে ফেরান নাজমুল ইসলাম। এরপর সৌম্য সরকার ও মোস্তাফিজুর রহমানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আবার ম্যাচ হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ১৮তম ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজ ফেরান মনীষ পান্ডেকে। শেষ ২ ওভারে ভারতীয়দের ছুড়ে দেয় তারা ৩৪ রানের লক্ষ্য। কিন্তু কার্তিক ক্রিজে নেমে বাংলাদেশের জয়ের আশায় জল ঢেলে দেন। ১৯তম ওভারে রুবেল হোসেনের বলে দুটি করে চার ও ছয়ে ২২ রান নেন তিনি। শেষ ওভারে ১২ রান দরকার ছিল তাদের।

আগের দুই ওভারে ২০ রান দেওয়া সৌম্য নেন বল হাতে। তার চতুর্থ বলে বাউন্ডারি মারার পর বিজয় শঙ্করকে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ বলে ৫ রান দরকার ছিল ভারতের। কভার বাউন্ডারিতে ৬ মেরে কার্তিক বাংলাদেশকে হতাশায় ডোবান। ৮ বলে দুই চার ও তিন ছয়ে ২৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।   

কার্তিক মহানায়করূপে আবির্ভূত হওয়ার আগে ১৬৭ রানের লক্ষ্যে নেমে রোহিতের ব্যাটে দুরন্ত সূচনা করেছিল ভারতীয়রা। তবে ৩২ রানের জুটি ভেঙে তাদের ধাক্কা দেয় বাংলাদেশ। তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে দুটি উইকেট পায় তারা। সাকিব আল হাসানের বলে শিখর ধাওয়ান ১০ রানে বদলি ফিল্ডার আরিফুল হকের দুর্দান্ত ক্যাচ হন। পরের ওভারে রায়নাকে রুবেল হোসেন পেছনে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করেন। আম্পায়ার ওয়াইড দিলেও মুশফিক রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত যায় বাংলাদেশের পক্ষে।

রোহিতের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়ে দশম ওভারে রুবেলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন লোকেশ। ১৪ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ২৪ রানে ডিপ স্কয়ার লেগে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দেন তিনি।

নাজমুল তার শেষ ওভারে রোহিতকে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান। ৪২ বলে চারটি চার ও তিনটি ছয়ে ৫৬ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে নামেন কার্তিক এবং ঠাণ্ডা মাথায় জেতান দলকে।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই ওভারে ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। যুজবেন্দ্র চাহালের লেগ স্পিনে তাদের বড় ধাক্কা দিয়েছিল ভারত। কিন্তু সাব্বির রহমানের দুর্দান্ত ইনিংসে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান করে বাংলাদেশ। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩৭ বলে ৫ চার ও দুই ছয়ে চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি করেন। তার ৫০ বলের ইনিংসে ছিল ৭ চার ও ৪ ছয়। 

শেষ দিকে জয়দেব উনাড়কাট জোড়া আঘাত হানলেও সাব্বিরের ৭৭ রানে লড়াই করার মতো স্কোর করেছে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজ ১৮ রান যোগ করেন। ৭ বলে তার অপরাজিত ১৯ রান ভালো ভূমিকা রেখেছিল।

চাহাল সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। দুটি পান উনাড়কাট।

এ নিয়ে পাঁচটি ফাইনাল খেলেও হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারলো না বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল তারা। এশিয়া কাপে ২০১২ সালে পাকিস্তানের কাছে হৃদয়বিদারক হার মানে টাইগাররা। চার বছর পর আরেকটি এশিয়া কাপে ভারত পরাস্ত করে তাদের। গত জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ দাপটের সঙ্গে শুরু করেও আরেকবার ফাইনালে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।