কাঁদলেন সৌম্য, কাঁদালেন সৌম্য

শেষ বলে দিনেশ কার্তিকের ছক্কার পর কান্নায় ভেঙে পড়লেন সৌম্য সরকারআরও একটি ফাইনাল, আরও একবার ব্যর্থতা। ফাইনাল মানেই যেন হৃদয়ের রক্তক্ষরণ। আরও একবার শোকে আচ্ছন্ন বাংলাদেশ। সৌম্যর শেষ বলের দিকে তাকিয়েছিল গোটা দেশ। বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা তখন সৌম্যর ওপরে। কিন্তু পারলেন না সৌম্য, তার বলে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে বাংলাদেশের জয় ছিনিয়ে নেন দিনেশ কার্তিক। তাই পিচে মুখ লুকিয়ে কাঁদলেন সৌম্য, কাঁদালেন গোটা দেশকে।

সাকিবের চোখেও তখন জল, কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে সৌম্যকে মাটি থেকে তুলে আনলেন। মুশফিক টেনে বুকে জড়ালেন তাকে। আরও একবার শোকে স্তব্ধ হয়ে বাংলাদেশকে শিরোপা বঞ্চিত হতে হলো। হয়তো ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আবার ফাইনালে খেলবে, শিরোপা খরা দূর হবে সেদিন।

৮ বলে ২৯ রানের অতিমানবীয় ইনিংসের পর প্রতিপক্ষের কিছুই করার থাকে না। নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে দিনেশ কার্তিকের এমন ইনিংসের পর কিছুই করার ছিল না বাংলাদেশের বোলারদের।

২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেদিন সাকিব-মুশফিকের কান্নায় ভেসে যায় ৫৬ হাজার বর্গমাইল। পাকিস্তানকে ৫০ ওভারের ম্যাচে ২৩৬ রানেই থামিয়ে দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু সাকিবের ৬৮ ও তামিমের ৬০ রানের পরও লক্ষ্য ছুঁতে পারেনি। শেষ দিকে মাশরাফি ও মাহমুদউল্লাহ লড়াই করলেও জয়ের জন্য তা যথেষ্ট হয়নি। সেই ক্ষত এখনও রয়ে গেছে কোটি ক্রিকেট-ভক্তের হৃদয়ে।

২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনালের পর সাকিব-মুশফিকদের কান্নাএর আগে ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভাগ্যদেবতা শিরোপা জিততে দেয়নি। ১৫৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল লঙ্কানরা। বাংলাদেশ যখন জয়ের উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন মুরালিধরনের ব্যাটিংয়ে হাতছাড়া হয় ট্রফি। এবার দিনেশ কার্তিক যেভাবে ম্যাচটা ছিনিয়ে নিলেন, ঠিক সেভাবে মুরালিধরন ১৬ বলে ৩৩ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে হারিয়ে দিয়েছিলেন টাইগারদের।

দুই বছর আগে ২০১৬ সালের মার্চে ২০ ওভারের এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে হেরে যায়। আগে ব্যাটিং করে স্বাগতিকরা ১৫ ওভারে ১২০ রান তোলে। জবাবে ভারত ৭ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের সহজ জয় পায়।

সর্বশেষ শিরোপা বঞ্চিত ফাইনালটি হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে। সেদিন মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলাদেশ। লঙ্কানদের ২২১ রানে অলআউট করেও জিততে পারেনি, অলআউট হয়ে যায় ১৪২ রানে। মাহমুদউল্লাহ (৭৬) ছাড়া কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেনি।

আবারও ফাইনালে হারের বেদনায় নীল বাংলাদেশ। সোমবার দেশে ফেরার কথা টাইগারদের। কিন্তু এই হারের ক্ষত কি সহজে দূর হবে? আরেকটি ফাইনাল, আরেকটি স্বপ্নভঙ্গের বেদনা। কবে শিরোপার উচ্ছ্বাসে বাংলাদেশ ভেসে যাবে? উত্তরটা জানা নেই কারও!