উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে সন্ধ্যা ৭টা থেকেই। বল রুমটা আস্তে আস্তে সাবেক ও বর্তমানদের আগমনে বর্ণিল হতে থাকে। সেই রংটা আরও বেড়ে যায় গর্ডন গ্রিজিন বল রুমে প্রবেশ করতেই। তার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ দলের খেলোয়াড়দের প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। বিদেশে থাকায় ছিলেন না কেবল আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও খালেদ মাহমুদ সুজন।
১৯৯৭ বাংলাদেশের আইসিসি ট্রফি জয়ের মূল নায়ক ছিলেন ক্যারিবীয় স্বর্ণযুগের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান গ্রিনিজ। ওই সাফল্যের পর তাকে বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে কেনিয়াকে হারিয়ে আইসিসি ট্রফি জয় করে দেশে ফেরার পর তার হাতে তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের পাসপোর্ট। বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বকাপেও খেলেছিল তার হাত ধরে। যদিও বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের দিন বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বরখাস্ত হন বিশ্বমানের এই সাবেক ক্রিকেটার।
বর্তমান জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে তামিম ও মাশরাফি ছাড়া প্রায় সবাই এসেছিলেন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ব্যাটসম্যানকে কাছে পেয়ে রোমাঞ্চিত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
হল রুমে ঢুকেই সবার আগে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে জড়িয়ে ধরে গ্রিনিজ। এরপর আস্তে আস্তে উপস্থিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন; শান্ত, অপি, বিদ্যুৎ, রফিক কেউই বাদ গেলেন না। আতাহার আলীকে বুকে জড়িয়েই নিলেন। শুধু তাই নয়, সাবেক সংগঠকদের পাশে পেয়ে যেন আবেগ ধরে রাখতে পারছিলেন না গ্রিনিজ। এসিসির সাবেক প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হক, আহমেদ সাজ্জাদুল হক, জালাল আহমেদ চৌধুরী, সাবেক বিসিবি পরিচালক মোবাশ্বর হোসেন চৌধুরীসহ প্রায় সব সংগঠক ছিলেন।
পাপনের বক্তব্যের পরই মঞ্চে ওঠেন বাংলাদেশের আইসিসি ট্রফি জয়ী কোচ। আবেগের ভেলায় ভেসে বেড়ানো গ্রিনিজ বললেন, ‘বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট আমার হৃদয়ে আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক উন্নতি করেছে। যেখানেই থাকি বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখি। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভালো অবস্থানে পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতে শীর্ষে অবস্থান করবে। এই সংবর্ধনা দেয়ার জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ের পর আমাকে নাগরিকত্ব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। সম্ভব হলে তার সঙ্গে দেখাও করতে চাই। এমন আয়োজন দেখে আমি পুলকিত। পরেরবার বাংলাদেশে আসতে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে চাই না।’
আইসিসি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক আকরাম খান গুরুকে কাছে পেয়ে ভীষণ খুশি, ‘বাংলাদেশ টিম এখন যে পর্যায়ে আছে, তাতে উনার অবদান অনেক। তিনি শুধু কোচই নয়, অভিভাবক হিসেবে আমাদের দেখিয়েছেন ও শিখিয়েছেন। তিনি এসেছেন বলে আমরা খুবই রোমাঞ্চিত। শুধু আমি না, ওই স্কোয়াডে যারা ছিল সবাই রোমাঞ্চিত। তাকে কিন্তু আমরা অন্য চোখে দেখি। আমাদের বড় সাফল্যে তিনি জড়িয়ে আছেন। তিনি সবসময় আমাদের প্রিয়পাত্র হয়ে থাকবেন।’