সাব্বিরের ফিটনেস ধরে রাখার রহস্য

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সাব্বির (ছবি: বিসিবি)গত ডিসেম্বর থেকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে পারেননি সাব্বির রহমান। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে জাতীয় ক্রিকেট লিগ চলাকালীন গ্যালারিতে এক কিশোরকে পেটানোয় ঘরোয়া ক্রিকেটে ৬ মাস নিষিদ্ধ হন বাংলাদেশের এই ব্যাটসম্যান। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা সিরিজ ও নিদাহাস ট্রফি খেললেও নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় দুই মাস ক্রিকেটের বাইরে তিনি। তারপরও ফিটনেস ঠিকই ধরে রেখেছেন সাব্বির। কীভাবে সেটা সম্ভব হলো, শনিবার ফিটনেস ক্যাম্পে জানালেন সেই কথা।

মাঝে পাকিস্তান সুপার লিগে পেশাওয়ার জালমির হয়ে কেবল দুটি ম্যাচ খেলেছেন সাব্বির। মার্চের মাঝামাঝিতে নিদাহাস ট্রফি শেষে ঘরোয়া ক্রিকেটে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ও বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ চললেও খেলতে পারেননি তিনি। কিন্তু ফিটনেস হারাননি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, ‘মাঠের বাইরে থাকা বড় বিষয় নয়। বিসিএল ও প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট খেলতে পারিনি। ওই সময়ে একা একাই নিজের ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। টেকনিক্যালি কিছু জিনিস ভুল ছিল, সেগুলো নিয়ে কাজ করেছি।’

ভবিষ্যতে এমন বিতর্কিত ঘটনা ঘটবে না আশ্বাস দিলেন সাব্বির, ‘আমার মনে হয়েছে এই সময়ে আমার ইতিবাচক থাকা জরুরী ছিল। আমি ইতিবাচক থেকেছি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। ক্রিকেট নিয়ে ভেবেছি কম। আশা করি সামনের বছরগুলোতে নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতে পারব।’

লম্বা সময় পর আবারও ক্রিকেটে ফিরছেন সাব্বির। ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন, ‘প্রত্যেকটা দিনই আমার জন্য চ্যালেঞ্জের। প্রতিটি সুযোগ আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে আসে, এটা গ্রহণ করাই আমার কাজ। আশা করি আফগানিস্তানের বিপক্ষেও চ্যালেঞ্জ নিতে পারব।’

এখন সামনে তাকিয়ে এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। নিজের লক্ষ্য নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমার লক্ষ্য হচ্ছে যে ভালো কাজগুলো করেছি, ওগুলো মাঠে করে দেখানো। তাহলেই আমি খুশি হব। বড় স্কোরের একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে আফগানিস্তান সিরিজে নিজেকে দেখতে চাই।’

অনুশীলনে সাব্বির, সঙ্গে খালেদ মাহমুদ সুজনটেকনিক ও টেম্পারমেন্টের চেয়ে নিয়মিত রান করার অভ্যাসকে এগিয়ে রাখছেন সাব্বির, ‘আত্মবিশ্বাস বড় জিনিস। বড় রান হলে টেকনিকে ত্রুটি থাকলেও সমস্যা হয় না। রান না করে ভালো শটে আউট হলে প্রশ্ন ওঠে যে টেকনিক খারাপ। অবশ্যই টেকনিকে ও টেম্পারমেন্টে সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় রানের চেয়ে বড় কিছু আর হতে পারে না।’

নিদাহাস ট্রফিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে বিদায় করে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টানটান উত্তেজনার ম্যাচে হেরে যায় তারা। তবে লঙ্কানদের দর্শক বানানোর সুখস্মৃতি নিয়েই ভারতের মাটিতে আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে খেলবেন সাকিব-তামিমরা। নিদাহাস ট্রফি থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস দলের কাজে লাগবে মনে করেন সাব্বির, ‘নিদাহাস ট্রফি আমাদের দারুণ আত্মবিশ্বাসী করবে। আশা করি একইভাবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে পারব আমরা।’

টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০ নম্বরে থাকা বাংলাদেশের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে আফগানিস্তান। কিন্তু র‌্যাংকিং নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না সাব্বির। ৩৯টি টি-টোয়েন্টি খেলা এই ব্যাটসম্যান অভিজ্ঞতাকে এগিয়ে রাখছেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে ছোট বড় দল বলে কিছু নেই। ধীরে ধীরে তারা (আফগানিস্তান) ভালো ক্রিকেট খেলছে। তবে অভিজ্ঞতায় আমরা এগিয়ে থাকব। আফগানিস্তানে তিন-চার জন বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে। আমাদের দলেও ভালো ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। আশা করছি অভিজ্ঞতা দিয়ে আমরা ম্যাচ জিততে পারব।’