কী নেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই শহরে? প্রশ্নটা সহজ, কিন্তু উত্তরটা বেশ কঠিন। নানা ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোত্রের কোটি মানুষের আনাগোনা এই শহরে। বহু জাতির সংস্কৃতির মিশ্রণ বিশ্বকে জানার দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে দুবাই। চোখ ধাঁধানো ইমারত, বহুরৈখিক শিল্পকর্ম দিয়ে ঠাসা এই শহর মোড়ানো আধুনিকতায়।
বিশাল সব অট্টালিকা যেন আকাশ ছোঁয়ার অপেক্ষায়। রাস্তাঘাটগুলো মসৃণ। সামান্যতম বালুর আস্তরণও নেই কোথাও। পুরো শহরে কৃত্রিম সৌন্দর্য্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যও মুগ্ধতা ছড়াবে ভ্রমণপিপাষুদের।
আবহাওয়ার রিপোর্ট বলছে, শনিবার ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকবে দুবাইয়ে। মাশরাফির দল অবশ্য দুবাইয়ের রোদ গায়ে মাখিয়ে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছে। এশিয়া কাপ যুদ্ধের গোলাবারুদ মজুদে মাশরাফি কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছেন না। ম্যাচের আগের দিন শুক্রবার বিকালে দুই মাঠে দুই দফা অনুশীলন করে শেষ প্রস্তুতি নেবে টাইগাররা।
এই শহরের প্রবাসী বাংলাদেশিরাও প্রস্তুত উদ্বোধনী ম্যাচটি উপভোগ করতে। প্রবাসীরা অনেকেই কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নিয়েছেন ম্যাচটা দেখবেন বলে। তাদেরই একজন মাগুরার সালেহ আহমেদ। তিনি ১১ বছর ধরে দুবাইতে আছেন। বর্তমানে স্থানীয় এক ব্যাংকের সিকিউরিটি বিভাগে কাজ করছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অনেকেই আমরা একসঙ্গে থাকি। শনিবারের ম্যাচ নিয়ে আমার বড় পরিকল্পনা আছে। অনেকদিন পর বাংলাদেশ দুবাইতে খেলবে। আমরা সবাই দলকে অনুপ্রাণিত করতে মাঠে থাকব।’
এবার আসি ট্যাক্সিওয়ালদের দাপট প্রসঙ্গে! দুবাইতে এসে সারাদিন ট্যাক্সিতে ঘুরতে চাইলে পকেট ফাঁকা হবে শতভাগ নিশ্চিত। এখানকার স্থানীয়দের সবার ব্যক্তিগত গাড়ি থাকায় পর্যটকদেরই কেবল ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে হয়।
অদ্ভুত শোনালেও সত্য এই শহরবাসীর মধ্যে এশিয়া কাপ নিয়ে মাতামাতি নেই। এশিয়ান দেশে কোনও একটি টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ব্যানার ফেস্টুনে শহর ভরে যায়। তার কিছুই এখানে চোখে পড়েনি। এই শহরের কেউ ক্রিকেটের খোঁজ না রাখলেও এশিয়ার অন্য দেশগুলো থেকে সমর্থকরা দেশকে সমর্থন জানাতে ছুটে আসছে। বাংলাদেশ থেকে বেঙ্গল টাইগার্স ফ্যান ক্লাব ও বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন থেকে ২০ জনের দল খেলা দেখতে এসেছে।
আরব আমিরাতে বাংলাদেশ প্রথমবার খেলতে গেছে, ব্যাপারটা এমন নয়। মরুভূমির দেশে পাঁচটি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে লাল-সবুজ জার্সীধারীদের, যার সবশেষটি ১৯৯৫ সালে!
তার মানে এই বাংলাদেশ দলের কারও আরব আমিরাতে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। যদিও পাকিস্তান সুপার লিগের কারণে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম এখানে খেলেছেন। সব মিলিয়ে সিনিয়রদের অভিজ্ঞতা হয়তো কাজে লাগবে এশিয়া কাপে।
ঘন্টাখানেক পর এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া ছয় দলের অধিনায়ক ট্রফি উন্মোচন করবেন। এরপর মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাবেন তারা। আগামী ১৪ দিনের ক্রিকেট যুদ্ধে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারিত হবে।
ছবি: রবিউল ইসলাম